উত্তর দমদমের এক জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্য টুইটার।
বহিরাগত শক্তির কাছে মাথা নত না করায়, বিজেপি-র বশ্যতা স্বীকার না করায় চার জনকে গুলি করে মারা হয়েছে। উত্তর দমদমের জনসভা থেকে শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে এ ভাবেই বিজেপি-কে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নির্মম, নৃশংস ভাবে চার জন তরতাজা যুবককে গুলি করে মেরেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাঁদের অপরাধ তাঁরা বাংলার মানুষ, বঙ্গবাসী।”
যাঁদের গুলি করে মারা হয়েছে তাঁদের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। লাঠি বা কোনও ডান্ডাও ছিল না বলে রবিবার দাবি করেছেন অভিষেক। কিন্তু তার পরেও বুকে গুলি চালানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “যদি আত্মরক্ষার জন্য মারতেন তা হলে হাতে মারতেন, আকাশে গুলি করতে পারতেন। ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত। কিন্তু তা করে না বুকে গুলি করা হয়েছে।” এর পরই অভিষেক হুঁশিয়ারি দেন, যাঁর নির্দেশে, অঙ্গুলিহেলনে এই কাজ হয়ে থাকুক, আগামী দিন তা খুঁজে বার করা হবে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতায় এলে এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তও হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়, “যত বড়ই মাথা থাকুক না কেন টেনে বার করব।” নেতাই, নন্দীগ্রামের পর গত ১০ বছরে এমন নৃশংস, ন্যক্কারজনক গণহত্যার ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেছেন অভিষেক।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শীতলকুচি নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়েও তোপ দেগেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। রবিবার বরাহনগরের এক জনসভা থেকে দিলীপ বলেন, “ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করার দিন চলে গিয়েছে। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ১৭ তারিখ সকালেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলকুচিতে দেখেছেন কী হয়েছে। জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’’ দিলীপের এই মন্তব্য উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে হাতজোড় করে অনুরোধ করব, আপনাদের মধ্যে যদি ন্যূনতম বিবেকবোধ থাকে, আগামী কাল সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেখান। আপনাদের কোনও ইন্ধন নেই প্রমাণ করতে হবে। যদি না করেন আপনার রাজ্য সভাপতির কথাই কিন্তু মানুষ মেনে চলবে।”
সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পর সিপিএমের কী পরিণতি হয়েছিল সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম করে সিপিএমের কী হাল হয়েছিল মনে আছে তো? আগামী দিন বাংলার মানুষ কড়ায় গণ্ডায় প্রমাণ করবে এই মাটি গুজরাত বা মধ্যপ্রদেশের নয়।” বাংলা যারা দখল করতে চাইছে তাদের বুলটের মাধ্যমে নয়, ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। পাশাপাশি হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, আগামী দিন যত বড় যুদ্ধই হোক না কেন, তাঁরা প্রস্তুত আছেন।