—ফাইল চিত্র।
কাল, শনিবার রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। যার মধ্যে পড়ছে কলকাতা পুলিশ এলাকার যাদবপুর, টালিগঞ্জ, কসবা, বেহালা পূর্ব এবং বেহাল পশ্চিমের পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র। রয়েছে মেটিয়াবুরুজ ও ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটও। তবে এই দুই কেন্দ্রের কিছু অংশ কলকাতা পুলিশের অধীন। এই সমস্ত কেন্দ্র পড়ছে কলকাতা পুলিশের ছ’টি ডিভিশনের ২৫টি থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার থানাগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার। ওই বৈঠকেই তিনি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মেনে ভোট করানোর নির্দেশ দেন। ভোট নিয়ে যাতে গোলমাল না হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। শান্তিপূর্ণ ভোট করতে আজ, শুক্রবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে। লালবাজার সূত্রের খবর, শনিবার কলকাতা পুলিশের প্রায় চার হাজার সদস্যকে ভোটের কাজে লাগানো হবে।
ওই ছ’টি ডিভিশনের ছ’জন ডিসি-র পাশাপাশি ২৫টি থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা জোরদার করতে ১৬ জন ডেপুটি কমিশনারকে (ডিসি) অতিরিক্ত দায়িত্ব দিল লালবাজার। একটি বা দু’টি করে থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এঁদের উপরে থাকছেন প্রতিটি ডিভিশনের দায়িত্বে এক জন করে যুগ্ম কমিশনার। মোট ছ’জন যুগ্ম কমিশনার শুক্রবার থেকে এলাকায় টহল দেবেন বাহিনী নিয়ে। যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত ডিসি― দুই পদমর্যাদার কর্তাদের সঙ্গেই থাকবেন একাধিক এসি এবং ওসি-সহ বিরাট বাহিনী। লালবাজার জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর কলকাতা পুলিশ। এ জন্য কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না লালবাজার। তাই শনিবার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার এবং যুগ্ম কমিশনারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ডিভিশনে বেশি সংখ্যায় ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ রাখা হচ্ছে। যাতে গোলমালের খবর পেলেই দ্রুত ওই বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে।
শনিবারের বিধানসভা কেন্দ্রগুলির মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ৭২১টি এবং বুথের সংখ্যা ২৩৪৩টি। প্রতিটি বুথের দায়িত্বে থাকছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। শহরে এই মুহূর্তে রয়েছে ১০২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর মধ্যে ৯০ কোম্পানিকে শনিবারের ভোটে ব্যবহার করা হবে। কিউআরটি, এবং বুথ ছাড়া লালবাজার এবং সংশ্লিষ্ট ডিভিশনগুলিতে তিন সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ‘কুইক রেসপন্স টিম’-এর (কিউআরটি) দায়িত্ব থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে।
প্রতিটি কিউআরটি-তে কলকাতা পুলিশের এক জন করে অফিসার থাকবেন। আজ, শুক্রবার থেকেই কিউআরটি-র মতোই এলাকায় টহল দেবে কলকাতা পুলিশের ১২৩টি ‘সেক্টর মোবাইল’ এবং ৭৫টি ‘আরটি মোবাইল’ ভ্যান। থানার অফিসার নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘আরটি মোবাইল’ বাহিনী। প্রতিদিন দুই শিফটে ওই বাহিনীর চার সদস্য থানা এলাকার বিভিন্ন সংবেদনশীল জায়গা ঘুরবেন। কিন্তু বুথের ভিতরে স্থানীয় পুলিশের প্রবেশাধিকার নেই। তাই বুথের ২০০ মিটার বাইরের দায়িত্ব থাকবে সেক্টর মোবাইলের হাতে। সেক্টর মোবাইলের দায়িত্বে থাকছেন এক জন অফিসার। তাঁর অধীনে থাকার কথা তিন পুলিশকর্মীর। কোনও ঘটনার খবর এলেই প্রথমে তাঁদের পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, আরটি মোবাইল আর সেক্টর মোবাইল বাহিনীর পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌঁছবে ‘হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড’। যার দায়িত্বে রয়েছেন এক জন করে ইনস্পেক্টর।