ভাণ্ডারী মন্দির ময়দানে যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
রাজ্যের ক্ষমতায় এলে গোর্খাদের ন্যায্য ‘রাজনৈতিক সম্মান’ দেওয়া হবে— সভামঞ্চ থেকে এমনই দাবি করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা যোগী আদিত্যনাথ।
বুধবার তিনি প্রথমে পৌঁছন জলপাইগুড়ির মালবাজার বিধানসভার ক্রান্তিতে। সেখানে ভাণ্ডারী মন্দির ময়দানে সভা আয়োজিত হয়। মন্দিরে পুজো দিয়ে সভামঞ্চে ওঠেন যোগী। এর পরে সেখান থেকে যান কার্শিয়াং-এর মন্টিভিট ময়দানে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার সমর্থনে জনসমাবেশে যোগ দেন যোগী।
এ দিন ক্রান্তির সভায় যোগী বলেন, “এখানে গোর্খাদের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। তবুও তাঁদের রাজনৈতিক সম্মান এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আমরা তাঁদের সেই সম্মান দিতে চাই।” অন্য দিকে কার্শিয়ং-এর সভায় তিনি বলেন, “এখানে গোর্খা ভাইদের অনেক দাবি রয়েছে, আমরা ক্ষমতায় এসে সেগুলি দেখব।”
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিমল গুরুং বিজেপি থেকে ‘১৮০ ডিগ্রি’ ঘুরে যেতেই অবস্থান বদল করেন বিনয় তামাংও। দুইয়ে মিলে গোর্খা ভোট নিয়ে বিজেপির যে দুশ্চিন্তা রয়েই গিয়েছে, তা এ দিন যোগী আদিত্যনাথের ভাষণে পরিষ্কার হয়ে যায়।
‘‘গোর্খাদের পাশে বিজেপি নয়, বরং দিদি প্রথম থেকেই রয়েছেন’’ বলে পাল্টা দাবি করেন রাজ্য তৃণমূলের তপসিলি কমিটির সহ-সভাপতি তথা ডুয়ার্সের নাগরাকাটা বিধানসভার প্রার্থী জোসেফ মুন্ডা।
এ দিন উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়ন কিছুই হয়নি বলেও রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন যোগী। তিনি বলেন, “সেবকে বিকল্প সেতু তৈরিতে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিতে চাইলেও রাজ্য তা নেয়নি, কারণ তা হলে পাহাড়, জঙ্গল, নদীতে তৃণমূলের চুরি বন্ধ হয়ে যাবে।” বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে চা শ্রমিকদের হাল ফিরবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। কার্সিয়ং এ যোগী পর্যটন শিল্প বিকাশের ঢালাও আশ্বাস দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের মতো পরিকাঠামো সেখানে নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথাও বলেন।
তবে বিমল ও বিনয়-পন্থী নেতারা এ দিন জানান, ১১ বছর ধরে পাহাড়ে বিজেপির জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও এত দিনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়নি।
এ দিন যোগীর সভায় লোক হয়নি বলে বিজেপির অন্দরমহলেই কানাঘুষো ছড়িয়েছে। অনেকে শুধু হেলিকপ্টার দেখে ফিরে গিয়েছেন বলে দাবি করেছে তৃণমূলের। মালবাজার বিধানসভার তৃণমূলের নির্বাচনী এজেন্ট স্বপন সাহা বলেন, “রাজ্যের সমালোচনা করার আগে কেন্দ্রে থেকে ওঁরা কী করলেন সেটা আগে বলতে হবে, অসম থেকে এনআরসি প্রত্যাহার করতে হবে, যত দিন তা না হবে তত দিন যোগী এলেও মাঠ ভরবে না।”