—ফাইল চিত্র।
নির্ধারিত সূচি মেনেই হবে ভোট। বাকি থাকা দফাগুলির ভোট এক দিনে করা সম্ভব নয়। তৃণমূলের দাবি খারিজ করে জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে চিঠি দিয়ে কমিশন জানায়, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনও উদ্বিগ্ন। সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাকি থাকা দফাগুলির ভোট একলপ্তে করানো সম্ভব নয়। কমিশনের নির্ধারিত সূচি মেনেই হবে ভোটগ্রহণ। বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেও কমিশনকে চিঠি লিখে তিনিও তৃণমূলের সুরেই বাকি দু’দফার ভোট এক লপ্তে করার আবেদন জানিয়েছিলেন।
ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোট একলপ্তে করার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার কমিশনে আবেদন করেছিল তৃণমূল। ওই দাবির পিছনে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকেই ঢাল করেছিল তারা। কিন্তু তৃণমূলের সেই দাবি খারিজ করে দিল কমিশন। কমিশনের যুক্তি, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এ বারের নির্বাচনের সময়সীমা ১১ দিন কমানো হয়েছে। তা ছাড়া ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইন অনুসারে, ভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার কমপক্ষে ১৪ দিন পর ভোট নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। তাই এখনই নতুন বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করে ভোট করানো সম্ভব নয়। পাশাপাশি কমিশন আরও জানিয়েছে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য কমিশন আগে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, এখন তা থেকে সরে আসা সম্ভব নয়।
তৃণমূল এক দিনে ভোট করার পিছনে রাজ্যের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছিল। তাদের মতে, নির্বাচন প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে চললে রাজনৈতিক দলগুলো সভা, মিছিল জারি রাখবে। সেখানে কোভিড বিধি অনেকেই মেনে চলেন না। ফলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কমিশন অবশ্য সে ব্যাপারে সরাসরি কিছু না বললেও তাদের যুক্তি, কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই কমিশন প্রচারের সময়ে রাশ টেনেছে। সময়সীমা কমিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত করেছে। এ ছাড়া ভোট গ্রহণের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচারে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। এমনকি ভোট গ্রহণের সময়ও সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে। তাই ভোট অপরিবর্তিতই থাকছে।
ষষ্ঠ দফার ভোট ২২ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার। কমিশনের সূচি মেনে ওই দিন ভোট হলেও, বাকি দু’দফা অর্থাৎ সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোট এক দিনে করার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল। গত সপ্তাহে কমিশনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকেও তারা এ ব্যাপারে সরব হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চা তাদের সেই দাবি নিয়ে আপত্তি জানায়। তাদের মতে, বিগত দফাগুলিতে যে ভাবে ভোট হয়েছে বাকি দু’দফার ক্ষেত্রেও তা হওয়া উচিত। শেষ পর্যন্ত কমিশন অবশ্য তাতেও সিলমোহর দিল।
কমিশনের ওই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিনহা টুইটারে লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোভিড প্রতিরোধের জন্য কমিশনকে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোট একদিনে করার অনুরোধ করেছিলেন। কমিশন সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন কোনও সন্দেহ নেই যে বিজেপি, মোদী, শাহ এবং কমিশন সুপার স্প্রেডার। এবং নির্লজ্জ ভাবে তারা এটি করছে’।