West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: নিরুপদ্রব ভোট দমদমে, ব্রাত্যের মুখে নাটক-থিয়েটার

সকাল থেকেই নজর ছিল দমদম কেন্দ্রে টানা দু’বারের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী ব্রাত্যের দিকে। সকাল ন’টা নাগাদ কালিন্দীতে বাড়ির কাছের বুথে সস্ত্রীক ভোট দিতে যান ব্রাত্য।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৮
Share:

কথা: দমদমে দলীয় কার্যালয়ে বসেই ফোনে ভোটের খবরাখবর নিচ্ছেন ব্রাত্য বসু। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে শনিবার সকাল সকালই ভোটটা দিয়ে এসেছিলেন। তার পরে বাকি সময়টুকু দক্ষিণ দমদমের মতিঝিলের দলীয় অফিসে বসে ফুরফুরে মেজাজেই কাটালেন দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের দু’বারের বিদায়ী বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এলাকার সাংসদ সৌগত রায় থেকে শুরু করে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ব্রাত্যের সেই আলাপচারিতা জমে উঠেছিল নাটক, সিনেমা, থিয়েটার নিয়েই। সেই আলোচনায় এ দিন ‘ব্রাত্য’ই রইল রাজনীতি।

Advertisement

এমন শান্তির ভোট দীর্ঘ দিন দেখেনি দসকাল থেকেই নজর ছিল দমদম কেন্দ্রে টানা দু’বারের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী ব্রাত্যের দিকে। সকাল ন’টা নাগাদ কালিন্দীতে বাড়ির কাছের বুথে সস্ত্রীক ভোট দিতে যান ব্রাত্য। মদম! দিনভর বিরোধীদের কয়েকটি ছোটখাটো অভিযোগ বাদ দিলে কার্যত নির্বিঘ্নেই ভোটগ্রহণ হল দমদম বিধানসভা কেন্দ্রে। তবে ব্রাত্য যখন দলীয় অফিসে বসে গল্প করে কাটালেন, তখন অন্য দুই প্রার্থী— সংযুক্ত মোর্চার তরফে সিপিএমের পলাশ দাস এবং বিজেপি প্রার্থী বিমলশঙ্কর নন্দ অবশ্য বিভিন্ন বুথে বুথে ঘুরলেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগও করলেন। যদিও সেই অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ মেলেনি।

এ দিন সকাল থেকেই নজর ছিল দমদম কেন্দ্রে টানা দু’বারের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী ব্রাত্যের দিকে। সকাল ন’টা নাগাদ কালিন্দীতে বাড়ির কাছের বুথে সস্ত্রীক ভোট দিতে যান ব্রাত্য। প্রায় একই সময়ে বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসুও। সে সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী সুজিতকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিলে গন্ডগোল বাধে। কিছু পরে ওই ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারেন তিনি। এর পরে বাইরে বেরিয়ে ক্ষুব্ধ সুজিত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী বরাবর কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হয়ে কাজ করছে। প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা কী রকম, সেটা দেখাই যাচ্ছে!’’ ভোট দিয়ে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সমালোচনা করে ব্রাত্যও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী বরাবর বিজেপির ইচ্ছেমতো কাজ করেছে। সেটা এ বারের ভোটে বরাবরই দেখা যাচ্ছে। এমনটা হওয়া একেবারে অনুচিত।’’

Advertisement

তবে দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৪১টি বুথে সারা দিন কার্যত নিরুপদ্রবেই ভোটগ্রহণ চলেছে। বেদিয়াপাড়ায় বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে মাঝেমধ্যে কিছু যুবকের জটলা দেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের সরিয়ে দিয়েছে। আবার মাস্ক না পরে ভোট দিতে আসা অনেককেই পকেট থেকে মাস্ক বের করে তা মুখে দিতে বাধ্যও করেছে। এ দিন বুথে বুথে ঘোরার সময় বিজেপি প্রার্থী বিমলশঙ্কর অভিযোগ করেন, ‘‘মতিঝিল, লালগড়ে আমাদের এজেন্টকে বসতে দেয়নি তৃণমূল। ১৮১ ও ১৮২ নম্বর বুথ দখল করা হয়েছে। লালগড়ে একটি বুথে আমাদের এক জন এজেন্টের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সিপিএম প্রার্থী পলাশের আবার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল কয়েকটি বুথে লোক জড়ো করে দখল করার চেষ্টা করলেও আমাদের বাধায় তা পারেনি।’’ তবে এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী ব্রাত্য।

এ দিন বিকেলের দিকে সৌগতকে নিয়ে বেদিয়াপাড়ার কয়েকটি বুথে যাওয়া মাত্রই মহিলা তৃণমূলকর্মীরা ব্রাত্যকে ঘিরে ধরে নিজস্বী তুলতে শুরু করেন। কেউ কেউ আবার পা ছুঁয়ে প্রণামও করলেন। ঘণ্টাখানেক বুথে কাটিয়ে ফের দলীয় অফিসে ফেরেন তাঁরা। আলোচনায় ফিরে আসে নাটক, থিয়েটার, সিনেমা। ব্রাত্যের কথায়, ‘‘বছরখানেক আগে শেষ সিনেমা ‘ডিকশনারি’ করার পরে আর কোনও কাজ করছি না। করোনা না কাটলে নতুন কিছু কাজে হাত দেব না।’’ উঠে এল ‘আমি অন্য কোথাও যাব না/ এই দেশেতেই থাকব’র রচয়িতা তথা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ। ব্রাত্যের কথায়, ‘‘ওঁর রাজনৈতিক আদর্শ সম্পর্কে বলতে পারব না। তবে ও খুবই ট্যালেন্টেড। ওঁর বিয়ের আমন্ত্রণপত্র দেখেই আমি চমকে গিয়েছিলাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement