West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ‘আজ আবার কী হবে!’ যেতে নারাজ টোটোও

গ্রামের দিকে এ দিন উৎসুক মানুষজনকে খুব একটা দেখা যায়নি। সেখানে তখন শুধুই কান্নার রোল।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

জোরপাটকি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৬
Share:

বিহ্বল: জোরপাটকি গ্রামে স্বজনহারা পরিজনেরা। রবিবার। শীতলখুচিতে। নিজস্ব চিত্র।

ভোট শেষ হওয়ার পরে চব্বিশ ঘন্টা কাটেনি। রবিবার সকালে রাস্তাঘাট প্রায় সুনসান। একটি-দু’টি গাড়ি চলাচল করছে। বাস-অটো নেই বললেই চলে। কোচবিহার শহর থেকে বেরিয়ে অন্ততপক্ষে ঘন্টাখানেক রাস্তায় অপেক্ষার পরে মিলছে গাড়ি। তবুও যে প্যাসেঞ্জার গাড়ি মিলবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। পিকআপ ভ্যান, ছোট প্রাইভেট গাড়িও যাত্রী তুলছে। সেগুলির কোনওটা হিন্দুস্থান মোড়, কোনওটা দোলং মোড় পর্যন্ত যাচ্ছে। সেখান থেকে অটো ধরে অন্ততপক্ষে চার-পাঁচ কিলোমিটার যাওয়ার পরেই সিতাই মোড়। সেখান থেকে জোরপাটকি গ্রাম সাত থেকে আট কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে সেই গ্রামে যাওয়ার জন্য অটো-টোটো ভরসা। শনিবার ভোটের দিন ওই গ্রামেই আমতলি স্কুলের বুথে আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। তার পর থেকেই গ্রাম জুড়ে এক আতঙ্কের ছবি।

Advertisement

সিতাই মোড় থেকে কেউই টোটো নিয়ে ওই পথে রবিবার যেতে চাইছেন না। এমনিতেই হাতে গোনা কয়েকটি টোটো দাঁড়িয়ে ছিল সিতাই মোড়ে। সকালের দিকে ওই পথে চলাচল করতে দেখা যায়নি অটো। জোরপাটকির নাম শুনেই এক টোটো চালক জানিয়ে দিলেন, “আজ ওই পথে যাব না।” আরও একজন টোটো চালক বলেন, “ওই এলাকার অবস্থা ভাল নয়। আজ আবার কী হবে কে জানে! তাই ওইদিকে ভাড়া নিয়ে যাচ্ছি না।” আর-এক টোটো চালক নাম শুনেই গাড়ি ঘুরিয়ে নিলেন।

বাসিন্দারা জানান, গ্রামে যাওয়ার দুটো রাস্তা আছে। একটি মাথাভাঙা-কোচবিহার প্রধান সড়ক থেকে বেলতলা হয়ে ওই গ্রামে পৌঁছনো যায়। আর-একটি শীতলখুচি হয়ে কাউয়ের ডেরা হয়ে শীতলখুচি পৌঁছনো যায়। ওই দুটি রাস্তা ধরেই মানুষ যাতায়াত করেন। তবে কাউয়ের ডেরা দিয়েই বাসিন্দাদের বেশিরভাগ অংশ যাতায়াত করেন। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রফিক, সফিউল হকরা জানান, কাউয়ের ডেরা হয়ে একটু সহজে গাড়ি পাওয়া যায়। সেখানে অটো পাওয়া যায়। এমনিতে অটো জোরপাটকি পর্য়ন্ত যাতায়াত করে না। সে জন্যেই ওই পথ ধরেই অনেকে যাতায়াত করেন। দু’দিক থেকেই গ্রামের ভিতরে যাওয়ার রাস্তা অবশ্য পাকা হয়েছে। কিন্তু গ্রামের ভিতরের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।

Advertisement

মৃত চারজন হামিদুল মিয়াঁ, ছামিউল হক, মণিরুজ্জামান মিয়াঁ, নুর আলম হোসেনের বাড়ি জোরপাটকি বাজার থেকে ওঁদের বাড়ি আরও খানিকটা ভিতরে। ওই এলাকাতেই গ্রামের বাড়ি আইএনটিটিইউসির জেলা নেতা আলিজার রহমানের। তিনি বলেন, “গ্রামের যাতায়াত ব্যবস্থা বলতে টোটো। গ্রামে এতবড় একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ায় অনেকেই টোটো নিয়ে বেরোননি। বাইরের অনেকেই আতঙ্কের জন্যেই গ্রামে যেতে ভয় পেয়েছেন।”

এ দিন রাস্তায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কিছু বাস চলাচল করেছে। তাতেও উপচে পড়েছিল ভিড়। তবে গ্রামের দিকে এ দিন উৎসুক মানুষজনকে খুব একটা দেখা যায়নি। সেখানে তখন শুধুই কান্নার রোল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement