ভোটকর্মীদের ব্যস্ততা। রঘুনাথগঞ্জে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে আজ সোমবার মুর্শিদাবাদের ৯ কেন্দ্র ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবে বলে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কংগ্রেস অভিযোগ তুলছে, যে সব এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে সেদিকে শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা চোরাগোপ্তা ভাবে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল এই জেলায় অশান্তি পাকিয়ে ভোট লুঠের চেষ্টা করবে। যদিও শাসকদলের নেতাদের দাবি, বিরোধীরা হারের ভয়ে এখন থেকে মিথ্যা অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। ওই সব অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই।
তবে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে ওই ৯টি কেন্দ্রে ১৭১কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রাজ্য পুলিশকে ভোটের নিরাপত্তার কাজে লাগানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ৫০ শতাংশ বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ২৭০টি বুথে মাইক্রো অবজারভার দেওয়া হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রতিটি বুথে অন্ততপক্ষে আধ সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকছে। এছাড়া ৫০ শতাংশ বুথে ওয়েবকাস্টিং করা হবে। থাকবে মাইক্রো অবজারভারও। এছাড়া স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা রুটমার্চ করছে।’’
তবে জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘শাসকদলের দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তাভাবে আমাদের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’’
বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক তপন চন্দ্র বলেন, ‘‘সোমবারে ভোটের দিনে তৃণমূল মুর্শিদাবাদে বুথে বুথে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবে। তবে আমরা তা রুখে দেব। এছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। তাঁর শান্তিতে ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চয় করবেন।’’
যা শুনে জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস বলেন, ‘‘হারের ভয়ে এখন থেকে বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য আমাদের অশান্তি পাকাতে হয় না। মানুষের ভোটে আমরা জয়ী হই।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা, সুতি, রঘুনাথগঞ্জ, সারগরদিঘি, নবগ্রাম, মুর্শিদাবাদ, লালগোলা, ভগবানগোলা ও রানিনগর কেন্দ্রে আজ নির্বাচন। এই ৯ টি কেন্দ্রে ৭৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জন মহিলা প্রার্থী রয়েছে। ২২ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৫৭ জন ওই ৭৬ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ১১ লক্ষ ৪১ হাজার ৩৬৭ জন পুরুষ, ১১ লক্ষ ১১ হাজার ৮৫৪ জন মহিলা ও ৩৬জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ভোট দেবেন।
এই ৯টি বিধানসভা কেন্দ্র ৩১৪৬টি বুথ রয়েছে। তার মধ্যে ৫৩১ টি বুথ স্পর্শকাতর। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ৫টি করে আদর্শ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র গড়া হয়েছে।