প্রতীকী ছবি।
দিন কয়েক আগেই নন্দীগ্রামে নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর আহত হন। এ দিন তিনি বাড়ি ফিরেছেন হাসপাতাল থেকে। তবে তাঁর এই আঘাতকে নিয়ে তৃণমূল যে প্রচার শুরু করেছে, তাতে ভোটে তারা বেশ খানিকটা এগিয়ে গেল বলেই মনে করছেন জেলা নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, একে তো অন্য কোনও দল এখনও জেলায় ভোটের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। তৃণমূল তাতে কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে। তার উপরে নেত্রীর আঘাতের বিরোধিতা করে তুমুল প্রচারে নেমে তাঁরা ভাল সাড়া পাচ্ছেন।
তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, জেলা স্তর থেকে একেবারে বুথস্তর পর্যন্ত প্রতিবাদ চলছে জেলায়। যদিও নির্বাচনের মুখে এমন ঘটনা আর তৃণমূলের এমন প্রতিবাদের বহরে অন্য গন্ধই পাচ্ছে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, প্রতিবাদ মিছিল, প্রতিবাদ সভা, শোকসভা এ সব করে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি পেতে চাইছে শাসক দল।
এছাড়া প্রতিবাদের নামে নিজেদের শক্তিও প্রদর্শন ও যাচাই দুই হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর যেভাবে দল অস্বস্তিতে পড়েছে তাতে নিজেদের কর্মীদের যাচাই করে নেওয়ার এটাই একটা সুযোগ এখানেই বোঝা যাবে কারা কারা দলের সঙ্গে আছে আর কারা নেই। এ দিন মুর্শিদাবাদ (দক্ষিণ) জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, "এই প্রতিবাদ মিছিলের নামে তৃণমূল নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছে। মানুষকে প্রভাবিত করতে চাইছে আমরা এই বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগও জানাতে যাচ্ছি খুব তাড়াতাড়ি।’’ সিপিএমের জেলার এক নেতা তথা রাজ্য কমিটির সদস্য প্রাক্তন সাংসদ বদরুদ্দোজা খান বলেন, ‘‘প্রথমে তিনি দাবি করেন তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে তারপর তিনি নিজের জায়গা থেকে সরে আসেন এমনকি বিভিন্ন দফতরের দেওয়া রিপোর্টেও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা নয় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন তৃণমূল এটাকে কাজে লাগিয়ে দুটো জিনিস করছে, এক, যেহেতু তৃণমূল ভেঙে যাচ্ছে সেহেতু এটা করে লোকগুলোকে রাস্তায় নামিয়ে রাখা যাতে, তারা পালিয়ে না জায়। দ্বিতীয়ত মানুষের মধ্যে সহানুভূতি জাগিয়ে তুলে সেটা ভোটের বাক্সে প্রতিফলন ঘটাও।"
এদিন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর এই নাটক না করলেও পারতেন তার দুদিনের দুরকম বিবৃতি তিনি নিজে বিভ্রান্ত হননি মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। শাসকদলের নেতারা যারা এটাকে কাজে লাগিয়ে মিছিল মিটিং করছে সেটা না করে আমার মনে হয় তাদের সিবিআই তদন্তের দাবি
করা উচিত।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আক্রান্ত হচ্ছেন নন্দিগ্রামে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে সেটা পরিকল্পিত। ধাক্কা দেওয়া হয়েছে এই নিয়ে বিজেপিও ক্রিটিসাইজ করেছে অধীর রঞ্জন চৌধুরীও ক্রিটিসাইজ করেছে কটুক্তি করেছে এটা দুর্ভাগ্যজনক ও নক্কারজনক। তাঁর এমন অবস্থায় তার যারা অনুগামী রয়েছে তাদের মধ্যে তো এখন উত্তেজনা হবেই।"