মৃত তৃণমূল কর্মী রবীন্দ্রনাথ মান্না। নিজস্ব চিত্র।
২৭ মার্চ নন্দীগ্রামের বয়াল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুরে রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী রবীন্দ্রনাথ মান্না। শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই খবর সামনে আসতেই তৃণমূল এবং বিজেপি-র অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায় নন্দীগ্রামে। ভোট মিটেছে সপ্তাহ খানেক। এরই মধ্যে এই মৃত্যু ঘিরে ফের তপ্ত নন্দীগ্রাম। আর এ বারও বিতর্কের কেন্দ্রে সেই বয়াল।
কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল ওই তৃণমূল কর্মীর। শুক্রবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। সন্ধেয় মৃত রবীন্দ্রনাথের দেহ কলকাতা থেকে নন্দীগ্রামে তাঁর বাড়িতে আনার কথা। দেহ আনতে ইতিমধ্যেই কলকাতায় পৌঁছেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র।
এই মৃত্যুর জন্য বিজেপি-কেই দায়ী করেছে তৃণমূল। সৌমেন বলেন, “শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিতে চেয়েছিলেন বলেই বয়াল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩ জনের ওপর প্রাণঘাতী হামলা করা হয়। মৃত রবীন্দ্রনাথের পরিবার অত্যন্ত গরিব। ও-ই ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। এটা অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।”
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ উ়়ড়িয়ে দিয়ে বিজেপি। ঘটনাটিকে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ বলে মন্তব্য করেছে তারা। বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “মৃত রবীন্দ্রনাথের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। তবে এই হামলার ঘটনায় বিজেপি-র কেউ যুক্ত নয়। এই ঘটনা তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল।”
তৃণমূল অবশ্য বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকেও আক্রমণ করেছে। সৌমেন বলেন, “এখন তো পুলিশ রাজ্য সরকারের হাতে নেই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ ২৭ মার্চের ওই ঘটনার কথা কমিশনকে জানানো হয়েছিল বলে দাবি করে সৌমেনের মন্তব্য, ‘‘অভিযোগ জানালেও নির্বাচন কমিশনের টনক নড়ে না। তারা শুধু শো-কজ নিয়েই ব্যস্ত।”
ঘটনাটি নিয়ে নন্দীগ্রামে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সৌমেন বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতারাই প্রতিনিয়ত মানুষকে উত্তেজিত করে চলেছেন।’’ এলাকায় রাজনৈতিক নেতাদের মদতপুষ্ট গুন্ডারাই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে জানিয়ে সৌমেনের সংযোজন, ‘‘বয়ালে তৃণমূলের উপর হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক ছিল। রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধ করব এলাকায় অশান্তি না ছড়াতে।’’
যদিও বিজেপি-র তরফে প্রলয় জানিয়েছেন, “তৃণমূল বরাবর মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করে। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও তাই রাজনীতি করার চেষ্টা হচ্ছে।”