অশান্তি: পড়ে রয়েছে পোড়া বাইক। বুধবার, শালিমারে। নিজস্ব চিত্র।
এক যুবককে গুলি করার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত হল হাওড়ার শালিমার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ শালিমারের রানি রাসমণি এলাকার লালকুঠি মাঠে ভোলা দাস নামে ওই যুবককে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি চালায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। সঙ্কটজনক অবস্থায় ভোলাকে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম যুবক এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ঘটনার পরে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা কয়েক জন দুষ্কৃতীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুর চালানো হয় একটি দোকানেও, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরবাইকে। পুলিশ ও র্যাফ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই ঘটনার জেরে বুধবার বিকেলেও আন্দুল রোডে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে তৃণমূল। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় নিরাপত্তারক্ষী ভোলা মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ লালকুঠির মাঠে একটি চেয়ারে বসে ভিডিয়ো গেম খেলছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অন্য নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, আচমকা তাঁরা পর পর তিনটি গুলির শব্দ পান। ছুটে এসে তাঁরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন ভোলা। আর দৌড়ে পালাচ্ছে কয়েক জন। ওই রক্ষীরাই ভোলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ দিকে, ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন তৃণমূল সমর্থকেরা। পিঙ্কু সিংহ নামে এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘সলমি আর সাদ্দাম নামে দুই দুষ্কৃতী গুলি করেছে ভোলাকে। ওকে সরানোর জন্য অনেক দিন ধরেই চেষ্টা হচ্ছিল। আসলে শালিমারে তৃণমূলের সংগঠনকে ধরে রেখেছিল ভোলা।’’
পুলিশ জানায়, ওই রাতেই উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা সাদ্দামের বাড়ি ও একটি দোকানে ভাঙচুর চালান। একটি মোটরবাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, গত ২৯ ডিসেম্বর দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত এলাকার ডাকসাইটে প্রোমোটার ও তৃণমূলের যুব নেতা ধর্মেন্দ্র সিংহের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভোলা। বর্তমানে শালিমার এলাকায় রানি রাসমণির যে ৫২ বিঘা সম্পত্তি আছে, সেখানে একটি প্রোমোটারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন তিনি। পুলিশ জানায়, দোষীদের চিহ্নিত করার দাবিতে ঘটনার রাতেই বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার বিকেল চারটে থেকে বটানিক্যাল গার্ডেন থানার সামনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। আধ ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে পুলিশের মৌখিক আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। ভোলাকে গুলি করার ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায় বলেন, ‘‘ভোলা দক্ষ সংগঠক ছিল। তাই ওকে সরিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় অশান্তি বাধাতে এই চেষ্টা করছে বিরোধীরা।’’