হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তৃণমূল কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হতেই বেলাগাম হিংসার চিত্র উঠে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায়। সোমবার রাতে কেতুগ্রামে খুন হলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম শ্রীনিবাস ঘোষ (৫৪)। তিনি কেতুগ্রামের আগরডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য ছিলেন। এই ঘটনায় বিজেপি-কেই দায়ী করেছেন মৃতের পরিজন এবং তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। যদিও সেখানকার বিজেপি প্রার্থী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ানোয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা বাড়িতে হামলা চালায় এবং শ্রীনিবাসকে ঘর থেকে টেনে বের করে মারধর করে। আগরডাঙা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান মিঠুন মিঞার অভিযোগ, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য শ্রীনিবাস ঘোষ রাতে ধানকাটার শ্রমিকের ঠিক করতে গ্রামের অন্য একটি পাড়ায় যাচ্ছিলেন। তখন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর উপর লাঠি, টাঙ্গি নিয়ে চড়াও হয়। এবং শ্রীনিবাসকে কোপায়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আমাদের আরও ২ কর্মী জখম হয়েছেন।’’
ঘটনার পর শ্রীনিবাস-সহ আহত ৩ তৃণমূল কর্মীকে নিয়ে আসা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই শ্রীনিবাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এক জন ভর্তি রয়েছেন কাটোয়ায়। চন্দ্রশেখর ঘোষ নামের অপর তৃণমূল কর্মীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
যদিও কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষ তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি অত্যাচার, ভাঙচুর শুরু করেছে। মালগ্রামে আমাদের কর্মীরা রবিবার রাত থেকেই গ্রামছাড়া। তাহলে আমাদের কর্মীরা কী করে হামলা করল?’’ মথুরার দাবি, ‘‘তৃণমূলের কিছু বহিরাগত লোকজনের হামলাতেই ওই পঞ্চায়েত সদস্য মারা গিয়েছেন বলে শুনেছি।’’ এ ব্যাপারে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেছেন, ‘‘বিজেপি-র হামলায় শ্রীনিবাস ঘোষ খুন হয়েছেন। আমরা চাই, অবিলম্বে হিংসা বন্ধ হোক। দোষীদের শাস্তি হোক।’’
এই ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও র্যাফ কেতুগ্রামের ওই এলাকায় টহলদারি শুরু করেছে। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে।’’