প্রতীকী ছবি।
রাজ্যব্যাপী সবুজ ঝড়ের মাঝে পূর্ব মেদিনীপুরে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূলের দুর্গ। জেলায় ১৬টি বিধানসভার মধ্যে ৯টিতে জয়ী তারা। কিন্তু বাকি সাতটি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি’র প্রার্থী। ওই আসনগুলিতে দলের কেন ভরাডুবি ঘটল, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছে জেলা তৃণমূলে। জেলার সবকটি আসনে যাঁরা দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন এবং বিধানসভা ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটরদের কাছ থেকে পৃথকভাবে রিপোর্ট চেয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
ইতিমধ্যে উত্তর কাঁথি, খেজুরি, হলদিয়ার মতো একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজয়ের প্রাথমিক কারণ হিসাবে শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং অন্তর্ঘাত প্রকাশ্যে এসেছিল। ভোটে ওইসব বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর সাংগঠনিক পরিস্থিতি কী, সে সম্পর্কেও খোঁজ খবর জানাতে বলা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে গত বছরের শেষ নাগাদ জেলায় ছ'জন কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে প্রথমে শুভেন্দু অধিকারী এবং পরে সাংসদ শিশির অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের সাংগঠনিক এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একাংশ গোপনে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠেছিল। বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময় ওই সব নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর এবং দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর হয়েছিলেন ভোটের কয়েক মাস আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মামুদ হোসেন। একইসঙ্গে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ান, ভগবানপুরের পরাজিত প্রার্থী অর্ধেন্দু মাইতি, হলদিয়া শহর সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র নিজে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা যে যে বিধানসভার দায়িত্বে ছিলেন, সেখানকার ব্যক্তিগত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিধানসভার প্রার্থীদেরও জেলা কমিটিতে সাংগঠনিক পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। আগামী সোমবার রাজ্যে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান রয়েছে। জেলা থেকে একাধিক বিধায়ক মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন বলে নেতৃত্ব আশাবাদী। তারপরেই আগামী সপ্তাহে জেলা কমিটির বৈঠকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোট এবং ভোট পরবর্তী সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দলের প্রার্থী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটরদেরকে পৃথকভাবে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সংগঠন মজবুত থাকা সত্ত্বেও কেন আমরা বাকি আসনগুলোতে পারিনি, তার কারণ খতিয়ে দেখা হবে।’’