দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তৃতার বিরুদ্ধে এ বার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল। বুধবার কমিশনের দফতের তৃণমূলের চার সদস্যের এক সংসদীয় দল যায়। পরে ওই দলের তরফে জানানো হয়, বাংলার নির্বাচনে প্রচারে এসে মোদী-শাহ জুটি যে ভাষণ দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে দু’পাতার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে কমিশনে। তারিখ-সহ স্থান, কাল ও বক্তৃতার অংশ বিশেষ উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবাদপত্রে। অভিযোগ, মোদী-শাহ দু’জনেই ‘দ্য পিপল অ্যাক্ট ১৯৫১’ (আরপি অ্যাক্ট) ভঙ্গ করেছেন।
গত ১০ এপ্রিল রাজ্যে চতুর্থ দফা ভোটের দিন শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জন নিহত হন। ওই দিন রাজ্যে এসে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ঘটনায় দায় চাপিয়ে দেন তৃণমূলের উপর। সেই অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্ব যে ভাল ভাবে নেননি, তা-ও স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবাদপত্রে। এ বিষয়ে কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তৃণমূল সাংসদরা।
গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নদিয়ার কল্যাণীতে মতুয়া ও নমশূদ্র সম্প্রদায়কে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যের অংশ বিশেষ ও নেটমাধ্যমের লিঙ্ক দিয়ে কমিশনে আপত্তি জানিয়েছে বাংলার শাসকদল। তাদের দাবি, ওই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নির্বাচনী বিধির ১(৩) অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করেছেন। মোদীর বিরুদ্ধে কমিশনে তৃণমূলের অভিযোগ, তিনি ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত পরিচয়ের কথা উল্লেখ করে ভোট চেয়েছেন।
গত ১০ এপ্রিল শীতলখুচিতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মারা যান রাজবংশী সম্প্রদায়ের যুবক আনন্দ বর্মণ। বিজেপি-র দাবি, আনন্দর পরিবার তাদের দলের সমর্থক। গত ১১ এপ্রিল শান্তিপুরে প্রচারে গিয়ে শাহ অভিযোগ করেছিলেন, বাহিনীর গুলিতে নিহতদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রী সমবেদনা জানালেও, রাজবংশী ওই যুবকের ক্ষেত্রে তা জানাননি। তৃণমূলের দাবি, এমন মন্তব্য করে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনী আচারণ বিধির অনুচ্ছেদ ১(১) ও ৩ অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করেছেন। এ সব ঘটনা কমিশনের দৃষ্টিতে আনার পাশাপাশি নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিংহের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল।