তমলুক শহরে শুরু হচ্ছে সাত দিনের রাম-সীতা উৎসব। নিজস্ব চিত্র।
রাত পোহালেই রামনবমী। বিধানসভা ভোটের মরসুমে করোনা পরিস্থিতিতে জাঁকজমক কমলেও, রাজনীতি কমেনি রামনবমী উৎসব পালন ঘিরে।
বিজেপি’র দুই সাংগঠনিক জেলা (কাঁথি, তমলুক) নেতৃত্বের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, রামনবমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা এবং ভোজের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। করা হবে শুধু পুজো। তবে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির নেতা তথা পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী যে ক্লাবের সম্পাদক, সেই ক্লাবের তরফে আয়োজন করা হয়েছ বিশাল ভোজসভার। যেখানে আনুমানিক দু’হাজার লোক আমন্ত্রিত বলে খবর।
সৌমেন্দু এ বছর জানুয়ারি মাসে বিজেপিতে যোগ দেন। তবে তিনি যে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত, সেই ক্লাবের ভোজ সভার সঙ্গের বিজেপি’র কোনও যোগ নেই বলে দাবি স্থানীয় নেতৃত্বের। ওই কর্মসূচি প্রসঙ্গে ক্লাবের এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা রাম পন্ডা বলেন, ‘‘পুজো, যজ্ঞ এবং প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এর জন্য দু’হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সকলকে ক্লাবের ঘরের ভিতরে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে খাওয়ানো হবে। মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হবে।’’
সৌমেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে পরপর কয়েক বছর ধরে কাঁথিতে তাঁর উদ্যোগে রামনবমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও পুজো করত তৃণমূল। এবার সৌমেন্দু না থাকলেও রামনবমী উদযাপন করবে তারা। প্রাথমিকভাবে কাঁথি শহরের ডরমিটরি মাঠে ওই কর্মসূচি হবে বলে স্থির করা হয়েছিল। তবে সেখানে অনুমতি না মেলায় রাজাবাজার এলাকায় পুরসভার এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়ির সামনেই পুজোর আয়োজন করেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের কর্মসূচিতেও পুজো, যজ্ঞ এবং বসিয়ে প্রসাদ খাওয়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই উৎসব কমিটির সভাপতি তথা কাঁথি পুরসভার প্রশাসক সিদ্ধার্থ মাইতি বলেন, ‘‘হাজার দেড়েক মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। করোনার জন্য সকলকে আগাম সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তা সত্বেও রামনবমী পালনে যারা আসবেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া থাকবে।’’
তমলুকে তাম্রলিপ্ত কৃষি, জনস্বাস্থ্য ও কুটির শিল্প মেলার ব্যানারে রামনবমীর অনুষ্ঠান হচ্ছে। যে মেলার সম্পাদক তমলুক প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। ওই কর্মসূচিতে শুধু পুজো, রামায়ণ দান এবং প্রসাদ খাওয়ানো হবে। তবে তাতে তেমন ভিড় হবে না বলে দাবি ওই তৃণমূল নেতার। আর তমলুক শহরে বিজেপি’র তেমন কর্মসূচি না হলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে অরাজনৈতিক ব্যানারে পুজো কর্মসূচি রয়েছে। ময়না এবং নন্দকুমার এলাকাতেও পুজো হবে।
জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব বলছেন, ‘‘রামনবমীর উপলক্ষে কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। জমায়েত এড়াতে প্রতিটি থানা এলাকায় টহলদারি চলবে।’’