West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: বিদেশের মাটি থেকে প্রচারের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনে গেল তৃণমূল

গত ২৬-২৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে ছিলেন মোদী। চিঠিতে কমিশনকে তৃণমূল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ২৬ মার্চের সভা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২১ ২২:২২
Share:

কমিশনের কাছে তৃণমূলের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করা হোক। গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।

বিধিভঙ্গের অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে গেল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, বিদেশের মাটি থেকে বাংলার ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন মোদী। তাদের দাবি, কমিশন মোদীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করুক। তাঁকে এমন ‘শাস্তি’ দিক, যাতে ভবিষ্যতে এমন আচরণ করার সাহস না পান মোদী। তৃণমূলের মতে, দেশের আর কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এর আগে এমন বেপরোয়া ভাবে অনৈতিক এবং অগণতান্ত্রিক কাজে লিপ্ত হতে দেখা যায়নি।

Advertisement

তৃণমূলের তরফে কমিশনকে ওই চিঠি লিখেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। চিঠিতে তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সফরে বিদেশের মাটি থেকে বাংলার ভোটে দলের প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একটি রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা মোদী পেয়ে থাকেন, তার অপব্যবহার করে বিদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের ভোট প্রক্রিয়া ও ভোটারদের প্রভাবিত করেছেন তিনি। সেখান থেকেই পরোক্ষে দলের প্রচারও করেছেন। যা নির্বাচনী বিধিভঙ্গেরই সামিল।

বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৬-২৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে ছিলেন মোদী। চিঠিতে কমিশনকে তৃণমূল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ২৬ মার্চের সভা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই তাঁদের। ‘হাজার হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ভারতের। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্বাধীনতার যুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের বিশেষ অবদান ছিল'। কিন্তু মোদীর ২৭ মার্চের সভা নিয়ে ঘোরতর আপত্তি রয়েছে তৃণমূলের। চিঠিতে তারা লিখেছে, ‘২৭ মার্চের সফরের সঙ্গে বাংলাদশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোনও সম্পর্ক ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর মতুয়াদের তীর্থস্থান দর্শনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল, পশ্চিমবঙ্গের ভোট এবং এক বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোটারদের উপর প্রভাব বিস্তার করা’।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তত ১৭ লক্ষ মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, এই ভোট ব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করতেই তাঁর সরকারি বাংলাদেশ সফরকে কাজে লাগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে অবশ্য এর আগেও মোদীকে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খড়্গপুরের জনসভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘‘ভোটের আগে কেন উনি বিদেশ গিয়েছেন, তা কি আমি বুঝছি না! উনি এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মন্দিরে গিয়ে পুজো দিলেন। যারা এই রাজ্যের ভোটার। এতে কি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হচ্ছে না? তা হলে প্রধানমন্ত্রী ভিসা বাতিল হবে না কেন?’’ কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে বাংলাদেশে মোদীর ২৭ মার্চের কর্মসূচির বিশদ দিয়ে তৃণমূল বলেছে, মোদীর এই সফর যে প্রচারের উদ্দেশ্য প্রণোদিত তার আরেকটি প্রমাণ এই সফরে তাঁর সঙ্গী বাছাই। তৃণমূল জানিয়েছে, ওই সফরে একজন মাত্র সাংসদকে সঙ্গে নিয়েছিলেন মোদী। তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে, ‘দলীয় প্রচার যদি মোদীর মতুয়া তীর্থ দর্শনের মূল উদ্দেশ্য না হয়ে থাকে তবে, অন্য কোনও দলের সাংসদকে নিজের সঙ্গী হিসেবে আমন্ত্রণ জানাননি মোদী। কেন মতুয়া সম্প্রদায়ের সাংসদকেই সঙ্গে নিলেন তিনি, যিনি ভারত সরকারে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদেই নেই’।

চিঠিতে তৃণমূল লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদের চূড়ান্ত অপব্যবহার করে বিদেশে থেকে দেশের ভোট প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছেন। এর আগে কোনও দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এতটা বেপরোয়া ভাবে অনৈতিক এবং অগণতান্ত্রিক কাজ করতে দেখা যায়নি, ভোটের আগে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে এর আগে দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রী বিদেশের মাটি থেকে দলের প্রচার করেননি।

কমিশনের কাছে তৃণমূলের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করা হোক। যাতে ভবিষ্যতে এমন কাজের পুনরাবৃত্তি না করেন তিনি। চিঠিতে কমিশনের কাছে মোদির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার দাবিও জানিয়েছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement