Tejashwi Yadav

‘দিদির লড়়াই আমার লড়াই’! বাংলায় পিতৃবন্ধুদের ছেড়ে নতুন আশ্রয়ে তেজস্বী

রবিবার দুপুর পর্যন্ত গুঞ্জন ছিল, ব্রিগেডে বামেদের সমাবেশে লালুপুত্র তেজস্বী উপস্থিত থাকতে পারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২১ ১৯:২৭
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তেজস্বী যাদব। সোমবার, নবান্নে। নিজস্ব চিত্র

মমতার পাশে তেজস্বী যাদব। বাম নেতাদের সঙ্গ ছেড়ে সোমবার লালুপুত্র নবান্নে দেখা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

Advertisement

রবিবার দুপুর পর্যন্ত গুঞ্জন ছিল, ব্রিগেডে বামেদের সমাবেশে লালুপুত্র তেজস্বী উপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু রবিবার কলকাতা এসেও ব্রিগেড এড়িয়ে যান আরজেডি নেতা। দলীয় কার্যালয় থেকে জানান, কার সঙ্গে থেকে বাংলায় লড়াই করবে দল, তা দু’এক দিনের মধ্যেই ঘোষিত হবে। শেষে সোমবার তৃণমূলের সঙ্গে থাকার কথাই ঘোষণা করলেন।

প্রায় ১ ঘণ্টা বৈঠক শেষে তেজস্বী বললেন, ‘‘মমতাদিদি লড়ছেন মানে আমি লড়ছি। তাই বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন আছে।’’ অর্থ স্পষ্ট, বামেদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কে বাংলার ভোটে আপাতত ইতি টানলেন লালুপুত্র।

Advertisement

নবান্নে দাঁড়িয়ে সমর্থনের জন্য তেজস্বীকেও সাধুবাদ জানালেন মমতা। বললেন, ‘‘আশীর্বাদ করছি, তেজস্বী যাদবের সরকার যাতে বিহারে তৈরি হয়। তেজস্বীই তো গত বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন। তারপর ওঁকে চালাকি করে হারিয়ে দেওয়া হল। আগামী দিনে ওই জিতবে। তেজস্বী সবচেয়ে বড় কথা বলেছেন, উনি লড়ছেন মানে, আমি লড়ছি। আবার আমি লড়ছি মানে, উনি লড়ছেন।’’

বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেও সরকার গড়তে পারেনি আরজেডি। কারণ জোটের নিরিখে এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। ১২৫ আসন পেয়ে জোটের মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার। সেই ভোটে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোটে ছিলেন লালুপুত্র।

তা হলে এখানে বাম শিবির থেকে কেন তিনি বেরিয়ে এলেন? তেজস্বী বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে মানুষের পাশে থেকে লড়াই করেছেন, যে ভাবে করোনার সময় মানুষের পাশে থেকেছেন, তা উদাহরণযোগ্য। তাই পূর্ণ শক্তি নিয়ে মমতাদিদির সমর্থনে লড়াই করব।’’

বিজেপি-র আগাগোড়া লক্ষ্য, রাজ্যের হিন্দি ভোটকে নিজেদের পক্ষে একত্রিত করা। যা রুখতে তৎপর তৃণমূলও। প্রচারে বারবার এসে পড়ছে বাঙালি-অবাঙালি মেরুকরণ, ‘ভূমিপুত্র’ ও ‘বহিরাগত’-র লড়াই। ব্যবধান ঘোচাতে নিজের হিন্দি ভোটব্যাঙ্ককে বারবার আপন করে নেওয়ার কথা বলেছেন তৃণমূলনেত্রী। সেই কৌশলে সোমবার তিনি পাশে পেলেন তেজস্বীকেও।

পশ্চিমবঙ্গে বিহারি ভোটারের সংখ্যা অনেকটাই, সে কথা মাথায় রেখে তেজস্বীর মন্তব্য, ‘‘বাংলায় প্রচুর বিহারের মানুষ থাকেন। থাকেন হিন্দি ভাষাভাষী মানুষও। তাই দেশের মানুষকে বাঁচাতে, গণতন্ত্রচাতে, সভ্যতা, সংস্কৃতি, সাহিত্য বাঁচাতে এই লড়াই লড়তে হবে। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে মমতাদিদির পাশে থাকব। বিজেপি-কে রুখতে মমতার পাশে থাকতেই হবে।’’ তাঁর পরবর্তী সংযোজন, ‘‘এলাকা ভিত্তিতে রাজনীতি পাল্টে যায়। এটা সভ্যতা, সংস্কৃতি বাঁচানোর লড়াই। মনে হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাত শক্ত করা আমার কর্তব্য। সেই কারণেও ওঁর পাশে দাঁড়ানো।’’

একদা বামেদের জোটসঙ্গী সমাজবাদী পার্টিও এখন তৃণমূলের পাশে। সম্প্রতি অখিলেশ যাদব জানিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকেই সমর্থন করবেন। ৮ দফা ভোট নিয়ে মমতার উদ্বেগে সুরও মিলিয়েছেন মুলায়মপুত্র। এ বার সেই পথ ধরেই মমতার পাশে এসে দাঁড়ালেন তেজস্বীও। জাতীয় রাজনীতিতে নীলবাড়ির লড়াইয়ের গুরুত্বে বাড়তি মাত্রা দিলেন তিনি। শোনা যাচ্ছিল, নির্বাচনে গুটিকতক আসন চাইতে পারেন তেজস্বী। যদিও তা নিয়ে সোমবার কিছু স্পষ্ট করেননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement