—ফাইল চিত্র।
আসন-রফার পথে সিপিএম এগিয়ে গেলেও কংগ্রেসের দোলাচলে আটকেই রইল জোটের ভবিষ্যৎ!
আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এবং সিপিএম, দু’পক্ষই জানিয়ে দিয়েছে তাদের পারস্পরিক সমঝোতা প্রায় সম্পূর্ণ। কংগ্রেস আইএসএফ-কে শেষ পর্যন্ত ক’টা আসন দিতে রাজি হবে বা আদৌ দেবে কি না, তার উপরেই জোটের বাকি ছবি নির্ভর করছে। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ও পেট্রল, ডিজ়েল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার ধর্মতলায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে আইএসএফ। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিলের পরে ওয়াই চ্যানেলে ওই সমাবেশ হবে। সেখানে বক্তা হিসেবে থাকার কথা আব্বাসের। জোট নিয়ে টানাপড়েন প্রসঙ্গে তিনি কী বার্তা দেন, সে দিকেই নজর রয়েছে রাজনৈতিক শিবিরের।
জোটকে ঘিরেই কংগ্রেসের অন্দরের পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, জোট নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস যে ভাবে টালবাহানা করছে, তাতে ‘ব্যথিত’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে। জোট সংক্রান্ত আলোচনার জন্য এআইসিসি এ বার যে কমিটি গড়ে দিয়েছিল, তার দুই প্রবীণ সদস্য মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্য একাধিক বার বাম এবং দু’বার আইএসএফের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার তাঁদের নেই। ফলে, বাম এবং আইএসএফের কাছে তাঁদের পক্ষে ‘মুখরক্ষা’ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
সূত্রের খবর, গোটা পরিস্থিতি জানিয়ে সনিয়াকে চিঠিতে মান্নান লিখেছেন, এখনও পর্যন্ত ১০ বার জোটের বৈঠক হয়েছে। তার প্রত্যেকটিতেই তাঁরা ছিলেন আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ছিলেন তিনটিতে। তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে আলোচনা করার কিন্তু তাঁরা যে মীমাংসা সূত্র দিচ্ছেন, তাতে প্রদেশ কংগ্রেসের সিলমোহর মিলছে না! যার ফলে, গোটা প্রক্রিয়া আবার নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে। বিরোধী নেতা দলনেত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৬ সালে এই মনোভাবের কারণেই বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার পরেও কিছু আসনে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হয়েছিল। এ বার তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। পাশাপাশিই সনিয়াকে জানানো হয়েছে, বিজেপি ও তৃণমূলের শীর্ষ স্তর থেকে জোটকে আক্রমণ করা হচ্ছে। যার অর্থ জোট দুই শাসক দলের কাছেই চিন্তার কারণ। কিন্তু কংগ্রেস সেই পরিস্থিতির ফায়দা নিতে ব্যর্থ।
কংগ্রেস যখন টালবাহানায় ভুগছে, তখন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রবিবার বেশি রাত পর্যন্ত আসন-রফার আলোচনা সেরেছেন আইএসএফ চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি। তিনি জানিয়েছিলেন, বামেদের সঙ্গে সমঝোতা প্রায় সম্পূর্ণ। বাকিটা নির্ভর করছে কংগ্রেসের উপরে। একই সুর সোমবার শোনা গিয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের গলায়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা ভাল ভাবেই এগিয়েছে। আর দু’টো আসন নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা বাকি আছে, সেটাও হয়ে যাবে। কংগ্রেস কোথায় কত আসন দেবে, সেটা ওদের কথা বলতে হবে আইএসএফের সঙ্গে।’’ বিশেষত, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি আসনের ব্যাপারে কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করার কথা বলেছেন নৌসাদ ও সেলিম, দু’জনেই।