ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচন মিটতেই এ বার রাজ্যসভার শূন্য আসন নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গেল তৃণমূলে। এই মুহূর্তে শূন্য একটি এবং আরও একটি শূন্য হওয়ার সম্ভাবনায় শাসক দলের আলোচনায় উঠেছে ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিন্হার নাম। দলীয় সূত্রে খবর, ঘরোয়া আলোচনায় এই দু’টি নাম এলেও তাতে ‘সিলমোহর’ পড়েনি।
সরকার গঠনের কাজ শেষ হওয়ার পরে তৃণমূলের সামনে এখন বকেয়া রয়েছে রাজ্যের পুরভোট। তবে তা নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপরে। কারণ, দেশের সঙ্গে এই মুহূর্তে রাজ্যেও সংক্রমণের আশঙ্কা উদ্বেগে রেখেছে প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্বকে। তবে শাসক দলের অন্দরে রাজ্যসভার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সূত্রেই রাজ্যসভার শূন্য আসনে প্রশান্ত ও যশবন্তের নাম নিয়ে কথা চলছে তৃণমূলে। আরও দু’একটি নাম আলোচনায় এলেও এই দু’জনের সম্ভাবনাই সব চেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
বিধানসভা ভোটের আগে দীনেশ ত্রিবেদী পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় তাঁর আসনটি শূন্য। পাশাপাশি রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া বিধানসভায় নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর আসনটিও শূন্য হওয়ার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে রাজ্যসভায় তাঁর আসনেও নতুন কাউকে পাঠাতে হবে তৃণমূলকে।
এই অবস্থায় প্রশান্তের নামই সর্বাধিক আলোচিত। বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে ভোট-কুশলীর কাজে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে প্রশান্তের তরফেও দলকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সক্রিয় রাজনীতিতে প্রশান্তের আগ্রহ বরাবরই স্পষ্ট। খুব বেশি দিন না হলেও বিহারের যুবক প্রশান্ত কিছু সময় নীতিশ কুমারের জেডিইউ-এর শীর্ষ পদেও ছিলেন। মতাদর্শের দিক থেকে কট্টর বিজেপি-বিরোধী হয়ে ওঠা প্রশান্তের সঙ্গে তৃণমূলের খুব বেশি ফারাক নেই। দলের তরুন প্রজন্মের মুখ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়াও ভাল। সেই সঙ্গে সামগ্রিক ভাবে রাজনীতিতে তাঁর দক্ষতা বিচার করে তাই সুবক্তা প্রশান্তকে নিয়ে এই প্রস্তাব ঘিরে নাড়াচাড়া চলছে তৃণমূলে।
একই ভাবে কেন্দ্রে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী যশবন্তকে নিয়ে ভাবনাচিন্তার শুরু বেশ কিছু দিন আগে থেকেই। প্রাজ্ঞ এই নেতার সঙ্গে মমতার সম্পর্ক অনেক পুরনো। আবার বিজেপির সঙ্গে বিরোধের কারণে যশবন্তও এখন কট্টর মোদী-বিরোধী। গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মমতা-যশবন্ত সম্পর্ক ভাল। দু’বছর আগে ব্রিগেডে মমতার সভাতেও ছিলেন তিনি। এ বারের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়ে কলকাতায় থেকে লাগাতার তৃণমূলের মুখপাত্রের কাজই করেছেন তিনি।
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘সব দিক থেকেই দিল্লির দরবারে তরুণ প্রশান্ত ও প্রবীণ যশবন্ত হতে পারেন মমতার উপযুক্ত প্রতিনিধি।’’