কীর্তন শিল্পী অদিতি মুন্সি।
একের পর এক তারকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে চলেছেন। কিন্তু তার মধ্যেই অন্য ঝলক নিয়ে এলেন কীর্তন শিল্পী অদিতি মুন্সি। তৃণমূল ভবনে প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নেওয়ার আগেই গাইলেন দু’কলি গান। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘প্রাণের দিদি’ বলে ডেকে বুঝিয়ে দিলেন কীর্তনের ঘরানা।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টের সময় তৃণমূল ভবনে অদিতি যে আসছেন তা আগেই জানা ছিল। কিন্তু তাঁর উপস্থিতিটা অন্য চেহারা নিল অদিতির সংক্ষিপ্ত কথাতে। রাজনৈতিক কথা না বলে, নিজের পরিচিত দক্ষতাকেই তুলে ধরলেন রাজনীতির মঞ্চে। দলের নেতারাই বলছেন, তৃণমূল ভবনে এমন যোগদান আগে হয়নি।
তৃণমূলে যোগদান করলেন অদিতি সহ অনেকে।
অদিতি তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে মমতাকে ‘প্রাণের দিদি’ বলে ডাকার পাশাপাশি জানান, ‘সৌগত জেঠুর’ হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিতে পেরে তিনি আনন্দিত। একই সঙ্গে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন বাংলার রূপকার। তাঁর মতো করে বাংলাকে ভালবাসা মানুষের সংখ্যা কম। বাংলার শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি যে কাজ করেছেন তা অতুলনীয়।’’ মমতার পাশাপাশি তৃণমূল যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানান অদিতি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
বৃহস্পতিবার অদিতির পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাংলা ও ভোজপুরি সিনেমার অভিনেতা ধীরজ পান্ডে ও টলিউডের অভিনেত্রী সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ছিলেন গারুলিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান উষা চৌধুরী। তবে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন অদিতিই। নিজে কখনও রাজনীতি না করলেও অদিতির পরিবেরে সেই ধারা রয়েছে। তাঁর প্রয়াত শ্বশুর তরুণ চক্রবর্তী তৃণমূলে ছিলেন। অদিতির স্বামী দেবরাজ উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় যূব তৃণমূলের সভাপতি। একই সঙ্গে বিধাননগর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর। অদিতি বলেন, ‘‘২০১৮ সাল থেকে বাড়িতে শ্বশুরমশাই ও স্বামীকে রাজনীতি করার আনন্দ উপভোগ করতে দেখেছি। এ বার সেই আনন্দ নিজে উপলব্ধি করতে চাই।’’ এর পরেই সৌগতর অনুরোধে সুরেলা গলায় অদিতি গেয়ে ওঠেন— ‘‘তোমায় হৃদমাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না। ছেড়ে দিলে সোনার হরিণ আর তো পাব না...।’’
এর পরে ওই যোগদান মঞ্চ থেকে অনেক রাজনৈতিক কথা বলেন সৌগত। কিন্তু তৃণমূল ভবনে যেন ওই গানের অনুরণন চলতে থাকে। দল ও বিশ্বাস ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার যে ধারা নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের আগে রাজ্যে চলছে তার মধ্যে অদিতির মুখে কীর্তনের কথাগুলো যেন অন্য এক রাজনৈতিক অর্থ নিয়ে এল।