West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ধর্নায় বসলেন সওকত

আইএসএফ ও বিজেপির দাপটে সকাল থেকে এলাকায় দৌড়ে বেড়ালেন সওকত। আইএসএফের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, এলাকায় বোমাবাজি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাস্তায় বসে প্রতিবাদও জানালেন।

Advertisement

সামসুল হুদা 

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০২
Share:

অন্য-দৃশ্য: পথে বসে বিক্ষোভ তৃণমূল প্রার্থীর। নিজস্ব চিত্র।

অন্যবার তাঁকে দেখা যেত, কন্ট্রোল রুমে বসে ভোট পরিচালনা করছেন। বিশেষ তাপ-উত্তাপ দেখা যেত না চোখে মুখে। এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা বলে তাঁকে চেনে সকলে।

Advertisement

এ বার অবশ্য নিজের গড়, ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সওকত মোল্লার অন্য চেহারা দেখলেন মানুষ। আইএসএফ ও বিজেপির দাপটে সকাল থেকে এলাকায় দৌড়ে বেড়ালেন সওকত। আইএসএফের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, এলাকায় বোমাবাজি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাস্তায় বসে প্রতিবাদও জানালেন।

মঙ্গলবার রাজ্যের তৃতীয় দফা, তথা দক্ষিণ ২৪ জেলার দ্বিতীয় দফার ভোটে ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রে এই ঘটনা চোখ টানল রাজনৈতিক মহলের।

Advertisement

এ দিন সকাল থেকেই ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের ভাঙড় ১ ব্লক এলাকার ঘুংড়ি ৪৭, ৪৮ বুথে বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গেলে তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। আজানউদ্দিন মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটে।

ঘটনার পরে দ্রুত এলাকায় পৌঁছে যান সওকত। আইএসএফ নেতা ইসা হক মোল্লা ঘুংড়ি ৪৭, ৪৮ নম্বর বুথে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বুথের ভেতরে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলে সেখান থেকে জমায়েত সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন সওকত।

বাউ শহর ১৪৭ নম্বর বুথে আইএসএফের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুরানগড় ৮০ নম্বর বুথ এলাকায় বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়।

সওকত গাড়ি থেকে নেমে ছেঁড়া পতাকা মাটি থেকে কুড়িয়ে নেন। ওই এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় রেবেকা খাতুন নামে একটি বাচ্চা মেয়ে বোমায় জখম হয়। রাস্তার পাশে বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এই ঘটনার পরেই ক্ষিপ্ত সওকত বটতলা-বেহুলাবাড়ি রাস্তার উপরে ধর্নায় বসে পড়েন। প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে ছিলেন তিনি।

পুলিশ ও বম্ব স্কোয়াড এসে বোমা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সওকত বলেন, ‘‘সকাল থেকে আইএসএফ, সিপিএম এলাকা দখল, বুথ দখল করার চেষ্টা করেছে। মানুষ তা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বাহিনীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত খারাপ। তারা বিজেপি ও আইএসএফকে সুবিধা করে দিতে কাজ করেছে।’’

চন্দনেশ্বর ১ পঞ্চায়েতের কাশীনাথপুর বুথে আইএসএফের এজেন্টদের মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দুর্গাপুর, মঠেরদিঘি, কালিকাতলা, তাম্বুলদহ এলাকায় আইএসএফের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হরিশপুর, বুরানগড়, এরেন্ডা, পিয়াদাপাড়া এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নেতড়া বুথে আইএসএফ কর্মীদের ভোটার কার্ড কেড়ে নেওয়া ও বুথে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আইএসএফ প্রার্থী গাজি শাহাবুদ্দিন সিরাজি এই ঘটনার খবর পেয়ে নেতড়া বুথে এলে গাড়ি ঘিরে ধরে হামলা চালানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। তিনি সেখান থেকে চলে যান। শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘‘তৃণমূল সকাল থেকে বেশ কিছু জায়গায় আমাদের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিয়েছে। কিছু জায়গায় ওরা গন্ডগোল করার চেষ্টা করে। কয়েকটি জায়গায় বোমাবাজি করেছে। ওদের আক্রমণে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন।’’

তাম্বুলদহ ১ এলাকায় ভোট দিতে গেলে বিজেপির মহিলা কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাম্বুলদহ ২, সারেঙ্গাবাদ, মঠেরদিঘি, কালিকাতলা এলাকায় বিজেপির এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।

বিজেপি প্রার্থী কালীপদ নস্কর বলেন, ‘‘ওরা বেশ কিছু এলাকায় আমাদের এজেন্টদের বসতে দেয়নি। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারি ছিল না।’’

এ দিন সকালে জীবনতলা এফপি স্কুল, মঠেরদিঘি হাইস্কুল-সহ ২২টি বুথে মক পোল করার পরেই ইভিএম খারাপ হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ওই সব বুথে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেশিন বদল করে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement