সীতারাম ইয়েচুরি ও রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
পঞ্চম দফার ভোটের প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছে বুধবারই। কোভিড পরিস্থিতির কারণে শেষ তিন দফার ভোটের প্রচারকে ছোট করে আনছে সংযুক্ত মোর্চা। করোনার জন্যই বড় কর্মসূচিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আপাতত কলকাতায় আসছেন না। কংগ্রেসের প্রচারে রাহুল গাঁধীর ফের বাংলায় আসাও আপাতত অনিশ্চিত। তবে এবিপি আনন্দে সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ওদের সভা-সমাবেশে লোকই হচ্ছে না। তাই ওরা এ সব নাটক করছে!’’
দিল্লিতে ইয়েচুরি আপাতত কোয়ারন্টিনে। কলকাতায় তাঁর আজ, শুক্রবার আসা এবং পরের দিন উত্তর ২৪ পরগনায় প্রচারের কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে। তবে সিপিএম সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বিচার করে কলকাতার ভোটের আগে ইয়েচুরি আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে রেখে সীমিত লোক নিয়েই সভা হতে পারে।
রাহুল উত্তরবঙ্গে সভা করে গিয়েছেন বুধবার। শেষ দুই দফায় কংগ্রেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুই জেলা মালদহ ও মুর্শিদাবাদে ভোট রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোররাতে মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। এমতাবস্থায় এ দিন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন, তাঁরা আর রাহুলের কর্মসূচি চাইছেন কি না। রাহুলের সভা হলে ভিড় যে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব না-ও হতে পারে, সেই আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার এআইসিসি-র উপরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডেরও মনোভাব, বড় কর্মসূচি সাধারণ ভাবে সিপিএম বা কংগ্রেস আর না করলে রাহুলও ফের রাজ্যে এসে অন্যথা করতে সম্ভবত চাইবেন না।
করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আজ সর্বদল বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। তার আগে সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেছেন, ‘‘আমরা বড় কর্মসূচি করতে চাই না বলেছি। কমিশনের উচিত করোনা পরিস্থিতিতে কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ করা। বিরোধীদের কোনও প্রস্তাব কমিশন শুনছে কোথায়? তারা নরেন্দ্র মোদী আর কেন্দ্রীয় সরকারের কথায় চলছে!’’ সংক্রমণ আবার যখন বাড়ছে, সেই সময়ে কুম্ভমেলা কী ভাবে চালিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছে সিপিএম।
সিপিএম ও কংগ্রেস ভিড় নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কোনও কর্মসূচি অবশ্য এখনও বাতিল হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আজ ফের রাজ্যে এসে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর উত্তর, ব্যারাকপুর, খড়দহ, রাসবিহারী, বালিগঞ্জ, চৌরঙ্গি কেন্দ্রে একাধিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার কথা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার ফের আসার কথা ১৯ এপ্রিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীরও একাধিক সভার সূচি রয়েছে, যার কোনওটাই এখনও স্থগিত করা হয়নি। কেন্দ্রের শাসক দলের ক্ষেত্রে কমিশন কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে কি না, প্রশ্ন তুলছে সিপিএম ও কংগ্রেস। এরই মধ্যে রাসবিহারীর কংগ্রেস প্রার্থী আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় তাঁর প্রচারে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিলি চালিয়ে যাচ্ছেন।