—প্রতীকী ছবি।
‘নিঃশব্দে জাগাও’— এই ভাবনায় ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে কার্যত প্রচারে নেমেছে আরএসএস। একে বলা হচ্ছে ‘জাগরণ কর্মসূচি’। একল বিদ্যালয়, ক্রীড়া ভারতী, বনবাসী কল্যাণ মঞ্চের মতো তাদের ২৫টির মতো শাখা সংগঠনকে একযোগে প্রচারে নামাচ্ছে সঙ্ঘ। সঙ্ঘ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই কর্মসূচি চলবে ভোটের আগে পর্যন্ত। কী কাজ তাঁরা করছেন, সেই নিয়ে কর্মীদের মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে সঙ্ঘেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিলি, প্রচার এবং প্রয়োজনে কারও বাড়িতে রাতও কাটাবেন তাঁরা। সরাসরি ভোটের কথা না বললেও দেশাত্মবোধ, গেরুয়া শিবিরের ভাবনার প্রসঙ্গ তুলে কোনটা ঠিক এবং কে ঠিক, তা বোঝানো হবে বাসিন্দাদের।
আরএসএসের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচি দু’ভাগে বিভক্ত, উত্তরবঙ্গ প্রান্ত এবং দক্ষিণবঙ্গ প্রান্ত। সপ্তাহখানেক ধরেই প্রাথমিক ভাবে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এখন বিভিন্ন বৈঠক চলছে। এই কর্মসূচিতে বিজেপি নেতাদের কাউকে সামিল করা হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে সঙ্ঘের শীর্ষ নেতারা বাইরে থেকে আসেন। দোর বন্ধ বৈঠকে সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন বিষয় কী করে মানুষকে বোঝাবেন, তা বলে দিয়ে যান। কর্মসূচি নিয়ে জানতে চাইলে আরএসএস নেতৃত্বের জেলাস্তরের কয়েকজন বলেন, ‘‘সঙ্ঘের এই কর্মসূচির বিষয়ে কিছু বলা নিষেধ। আমাদের কাজ নিঃশব্দে মানুষকে সচেতন করা।’’
কিন্তু ভোটের মুখে এই কর্মসূচি কেন? ভোটের প্রচারের সঙ্গে এর যোগ রয়েছে কি? আরএসএসের জেলাস্তরের এক নেতার কথায়, ‘‘ভোট এলে মানুষ একটু বিভ্রান্তির মধ্যে থাকেন। দিগভ্রষ্ট হন। ঠিক করতে পারেন না, কাকে ভোট দেবেন। সেটা তাদের বোঝানো দরকার।’’ ওই নেতা বলেন, ‘‘আমরাকোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের নাম করে বলি না। আমরা পরিস্থিতি তুলে ধরি। আমরা বলি, পাঁচ জন প্রার্থীর মধ্যে হেরফের রয়েছে। তার মধ্যে যে ভাল, তাকে দেবেন। সেই ভাল কে, তা বুঝতে সাহায্য করি।’’ অর্থাৎ, সরাসরি না বলেও গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীদের হয়েই যে পরোক্ষে প্রচার হয় এই ‘জাগরণ কর্মসূচিতে’, সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন তিনি।
সঙ্ঘ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের আগে কর্মসূচিতে নেমে বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। তখন তাঁরা জানান, নির্দিষ্ট কারও হয়ে প্রচারে আসেননি। তার পরে ভারতীয় সংস্কৃতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে বনবাসী ঋষি, পরবর্তীকালের মহান মানুষদের কথা বলেন তাঁরা। কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে, জানান সে কথা। বলেন, সাধারণ মানুষের স্বপ্ন যাতে সফল হয়, সে জন্যই এই জাগরণ কর্মসূচি। ‘জাগরণ’ পত্রিকা ছাপানোর কাজও চলছে। হাতে এলে তা-ও বিলি করা হবে, জানান সঙ্ঘ সদস্যরা।