nপ্রস্তুতি: (বাঁ দিক থেকে) ঝালদায় মঞ্চের র্যাম্পের কাঠামো। বলরামপুরে পুলিশ আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামে পায়ে গুরুতর চোট পাওয়ার পরে জনসভা করতে আজ, সোমবার পুরুলিয়ায় আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার ঝালদা ও বলরামপুরে দেখা গেল, হেলিপ্যাড থেকে ৭০-৮০ মিটার দূরেই হয়েছে মঞ্চ। হুইল চেয়ারে তাঁর হেলিকপ্টার থেকে নামা এবং মঞ্চে ওঠার জন্য তৈরি করা হচ্ছে আলাদা র্যাম্প । পাশাপাশি, হেলিপ্যাড থেকে মঞ্চ পর্যন্ত যাওয়ার জন্য গাড়িও রাখা হবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জনসভাটি রয়েছে বেলা দেড়টা নাগাদ, বাঘমুণ্ডি বিধানসভার ঝালদা হাইস্কুলের মাঠে। বিকেল ৩টেয় পরের সভা বলরামপুরের রথতলা সংলগ্ন ময়দানে। রবিবার দুপুরে দেখা গেল, প্রায় সাত ফুট উচু মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতার মঞ্চে ওঠার জন্য বানানো হচ্ছে ৩৬ ফুট লম্বা এবং আট ফুট চওড়া র্যাম্প। এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকে নামার জন্য থাকছে ছোট একটি র্যাম্প ।
এ দিকে, নন্দীগ্রামের ঘটনার পরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আঁটসাঁট করা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে ঝালদার সভাস্থল পরিদর্শন করেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজশেখরন। রবিবার বিকেলে তিনি গিয়েছিলেন বলরামপুরের সভাস্থলে। পুলিশ সূত্রের খবর অতীতে মুখ্যমন্ত্রীর সভার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভাল করার দায়িত্বে থাকতেন এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক। এ বার সভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিক।
দু’জায়গাতেই সভাস্থল ও আশপাশে অন্তত চারশো পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ঘটনার পরে এই প্রথম নির্বাচনী সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নিরাপত্তা-সহ কোনও বিষয়ে কোনও ঝুকি নেওয়া হচ্ছে না।’’
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা বলরামপুরের এ বারের প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলের মানুষজনের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। পায়ের চোট নিয়েও তিনি সভা করতে আসছেন। তাঁকে দেখতে, তাঁর কথা শুনতে দু’টি সভাতেই রেকর্ড ভিড় হবে।’’ বাঘমুণ্ডির তৃণমূল প্রার্থী সুশান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘বাঘমুণ্ডি বিধানসভার অন্য়ত্র সাম্প্রতিক অতীতে এলেও ঝালদায় মুখ্যমন্ত্রী সভা করতে আসছেন পনেরো বছর পরে। আমাদের কাছে তাই এই সভার গুরুত্বই আলাদা।”
বাঘমুণ্ডিতে কংগ্রেসের বিদায়ী বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর বিরুদ্ধে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী যুব নেতা সুশান্ত। গত তিন বছর ধরে কার্যত বাঘমুণ্ডিতে পড়ে থেকে সংগঠন গুছিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে, শান্তিরামবাবুকে এ বারেও বলারমপুর থেকেই প্রার্থী করছে তৃণমূল। লোকসভায় ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের থেকে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও বিধানসভায় গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা করেছেন দলেরই এক ‘বিক্ষুব্ধ’।
এই পরিস্থিতিতে দু’টি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের সমস্ত স্তরের নেতা-কর্মীরা।
তবে বিজপির জেলা সভাপতি বিদ্য়াসাগর চক্রবর্তীর দাবি,‘‘ মুখ্যমন্ত্রী যতই প্রচার করুন, জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের সমর্থন বিজেপি পাচ্ছে।”