ক্ষোভ প্রকাশ করে সুপ্রকাশের ফেসবুক পোস্ট। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই সামজ মাধ্যমে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন রামনগরের বিধায়ক অখিলের পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। যা েদখে জেলাবাসীর কাছে এটা স্পষ্ট যে, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে থাকা সুপ্রকাশ আসন্ন বিধানসভা ভোটে দলের প্রার্থী তালিকাই ঠাঁই না পেয়ে যথেষ্ট ‘ক্ষুব্ধ’।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এবার বিধানসভা ভোটে সুপ্রকাশ প্রার্থী বলে হতে পারেন বলে জল্পনা ছিল। কিন্তু শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৯৪টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের যে নাম ঘোষণা করেন, তাতে ঠাঁই নেই সুপ্রকাশের। এর পরেই নিজের ফেসবুকে সুপ্রকাশ করেন, ‘‘মজা করে বন্ধুরা বলত, পয়সা না থাকলে রাজনীতি করতে যাস না। আজ পারফরম্যান্সকে হার মানতে হল পয়সার কাছে। আজ বুঝলাম পারফরম্যান্সের কোনও দাম নেই এই যুগে।’’ যদিও পরে তিনি ওই পোস্ট মুছে দেন।
সুপ্রকাশের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজমাধ্যমে হইচই পড়ে গিয়েছে। কেউ কেউ সমবেদনা জানিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। সুপ্রকাশকে শক্ত হাতে হাল ধরার কথা লিখেছেন। নিজের ফেসবুক পোস্টের ব্যাপারে জানতে চেয়ে সুপ্রকাশকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে মেসেজ করা হয়। তারও উত্তর মেলেনি।
শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের পরে জেলায় দলের সাংসদ শিশির অধিকারী-সহ অধিকারী পরিবারের ক্ষমতা খর্ব করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তারপর থেকেই অখিলর পরিবার এবং সুপ্রকাশ বাড়তি দায়িত্ব পেয়েছেন। শুভেন্দুকে টেক্কা দিতে একের পর এক কর্মসূচি নিতে দেখা গিয়েছে সুপ্রকাশকে। পরে তাকে জেলার যুব সভাপতি করা হয়। গত জানুয়ারি মাসে নন্দীগ্রামের সভা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে শুভেন্দুকে বলেছিলেন, ‘‘আগে সুপ্রকাশকে সামলাও। তারপর।’’ কিন্তু সুপ্রকাশকে সামলানোর আগেই যে ভাবে এই যুব নেতা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, তাতে তৃণমূল অস্বস্তিতে। যা নিয়ে কটাক্ষ করছে বিজেপি। বিজেপির জেলা (কাঁথি) সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ্যরা কখনই সম্মান পায় না। সব কিছুতেই রাজ্যের শাসক দল যে কাটমানি খায়, এ দিন তা তাঁর দলের নেতা স্পষ্ট করে দিলেন।’’
এ দিনের পোস্টের পরে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির পরবর্তী পদক্ষেপ ঘিরে বাড়ছে জল্পনা। যদিও দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে কাঁথির সংসদ তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী বলেছিলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর পক্ষে মানুষ রায় দেবেন। একই সঙ্গে জেলাতে ভিতরে ভিতরে তৃণমূলের সংগঠন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে কী কারণে তা বলতে পারব না।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পোড়খাওয়া রাজনীতিক শিশিরের এহেন বক্তব্যের পর এ দিন সুপ্রকাশের পোস্ট। যা আসন্ন বিধানসভা ভোটে জেলার ১৬টি আসনে বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের।