বাঁশ-লাঠি নিয়ে হাজির মহিলা এবং ছোটরাও। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট মিটে যাওয়ার পরেও অশান্তি থামছে না বর্ধমানে। শনিবার ভোট মিটে যাওয়ার পর রাতেই এক দফা অশান্তি এবং ভাঙচুর হয়েছে সেখানে। রবিবার সকালেও সেখানে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে তৃণমূল এবং বিজেপি-র কর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে। তাতে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন।
রবিবার সকালে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের লক্ষ্মীপুর মাঠে ২ দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। মাটিতে ফেলে, লাঠি দিয়ে সেখানে দলীয় কর্মীদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ২ দলই। আহতরা ঠিক কোন দলের, তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। আহতদের অবশ্য নিজেদের দলের সদস্য বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
তবে এর নেপথ্যে ভোট সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে বলে দাবি করেছেন জোড়াফুল শিবিরের স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, শনিবার রাতে ভোট মিটে যাওয়ার পর বেছে বেছে এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে এবং এলাকার একটি ক্লাবে হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিজেপি-র লোকজন।
খবর পেয়ে সকালেই এলাকায় পৌঁছন তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস ও তাঁর সমর্থকরা। সেখানে বিজেপি প্রার্থী খোকন সেন ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে ঝামেলা বাধে তাঁদের। প্রথমে বচসা শুরু হলেও অল্প ক্ষণের মধ্যেই হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। মহিলা এবং ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও তাতে শামিল হন। তার পর লাঠি নিয়ে নিয়েও চড়াও হন একদল মানুষ। তাতেই ধুন্ধুমার বেধে যায়। যদিও বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব কারও বাড়িতে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন।
বিজেপি-র খোকন সেনের দাবি, ‘‘খোকন দাস এক জন মাফিয়া। আবদুর রহমানের সঙ্গে মিলে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছেন। হেরে যাওয়ার ভয় চেপে বসেছে। মহিলা-শিশু কাউকেই ছাড়ছেন না। পুলিশকে জানিয়েছি। এর একটা বিহিত না হলে আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবেন স্থানীয় মহিলারা।’’
তবে তৃণমূলের খোকন দাস বলেন, ‘‘রাতে গ্রামে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে বিজেপি। ক্লাবেও হামলা চালিয়েছে। মহিলাদের মারধর করেছে। ওরা ভাবছে, ভোটে জিতেই গিয়েছে। প্রশাসনও বিক্রি হয়ে গিয়েছে বিজেপি-র কাছে। কিন্তু আমরা বসে থাকতে পারি না। সমর্থকদের রক্ষা করতে জান লড়িয়ে দেব।’’
ঝামেলার খবর পেয়ে এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও শান্ত হয়নি বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোটের দিনও একপ্রস্থ ঝামেলা হয়েছিল। তবে ভোটগ্রহণ শান্তিতেই হয়েছে। কিন্তু ভোট পরবর্তী এই অশান্তিতে তটস্থ তাঁরা।