—প্রতীকী ছবি।
ভোটকেন্দ্রে ছিল না র্যাম্প। এমনকি, ব্রেল ব্যালট পেপারও ছিল না বলে অভিযোগ। সেই সব কিছু মেনে নিয়েই ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন কসবার দৃষ্টিহীন ভোটার সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তিনি সত্যিই দৃষ্টিহীন কি না, যাচাই করতে ‘ফার্স্ট পোলিং অফিসার’ সায়ন্তনবাবুর চোখের সামনে হাত নেড়ে জানতে চান, ক’টি আঙুল তিনি দেখছেন। রবিবার কসবার ডিপিএস জুনিয়র স্কুলের বুথে ভোট দিতে গিয়ে এমনই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন কসবা রথতলার বাসিন্দা, পেশায় স্কুলশিক্ষক ওই ব্যক্তি। অভিযোগ শুনে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক ভূপেন্দ্র সিংহ পুনিয়া জানান, তিনি বিষয়টি জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে (ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার বা ডিইও) জানাবেন।
প্রতিবন্ধকতা যুক্ত সব ভোটারকে ভোটদান প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে নানা কর্মসূচি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। উত্তর কলকাতায় এ নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী, শিক্ষাবিদ কাঞ্চন গাবা। সায়ন্তনবাবুর অভিযোগ শুনে স্তম্ভিত কাঞ্চনদেবী বলেন, ‘‘এমন ঘটে থাকলে তা ভীষণই যন্ত্রণাদায়ক। প্রতিবন্ধীদের ভোটের অধিকার সুনিশ্চিত করতে গেলে শুধু তাঁদের উৎসাহী করলেই চলবে না। সমান গুরুত্ব দিয়ে ভোটকর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’’
ঠিক কী ঘটেছিল?
রবিবার সায়ন্তনবাবু বলেন, ‘‘বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। আমি যে দৃষ্টিহীন, সে কথা বিশ্বাস করতে চাননি ফার্স্ট পোলিং অফিসার। আমার চোখের সামনে হাত নেড়ে জিজ্ঞাসা করেন, ‘ক’টা আঙুল দেখছেন’। বিষয়টি খুবই অপমানজনক লেগেছে আমার। ২০১১-র বিধানসভা ও তার পরে দু’টি লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। কখনও এমন ঘটেনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি মোবাইলে আমার প্রতিবন্ধী শংসাপত্র রেখে দিই। সেটি পোলিং অফিসারকে দেখালেও উনি মানতে চাননি। উল্টে পোলিং এজেন্টরা যখন অফিসারকে জানান আমি দৃষ্টিহীন, তিনি পাল্টা বলেন, ‘ভোটটা আমাদের করাতে দিন’।’’
সায়ন্তনবাবুর আরও অভিযোগ, এ বার বুথে ব্রেল ব্যালট পেপার ছিল না। প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে সেটি চাওয়ার পরে তিনি বিস্তর খোঁজাখুজি করেন। তার পরে জানান, ওই ব্যালট পেপার নেই।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কসবা বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক বলেন, ‘‘আমি ওই ঘটনার কথা জানি না। তবে বিষয়টি ডিইও-কে জানাব।’’ সায়ন্তনবাবু বলেন, ‘‘এ বার প্রতিবন্ধকতা যুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িতে বসেই ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আমার কাছে প্রশাসনের কেউ আসেননি।’’