প্রতীকী ছবি।
বাস্তবেই ঘরে বাইরে লড়াইতে গোয়ালপোখরের বিদায়ী বিধায়ক গোলাম রব্বানি।
এ বার প্রার্থী হননি দীপা দাশমুন্সি। কিন্তু যাকে এক সময়ে হাত ধরে জিতিয়েছেন প্রিয় জায়া দীপা, আজ তাঁকেই হারাতে ময়দানে তিনি। ২০১১ সালে গোয়ালপোখরে কংগ্রেসের প্রার্থী গোলাম রব্বানিকে জেতাতে সক্রিয় ছিলেন দীপা। বছর দুয়েক পরে তৃণমূলে যোগ দেন রব্বানি। দলে তাঁর ঘনিষ্ট মাসুদ মহম্মদ নাসিম আহসানও গত বিধানসভা ভোটে রব্বানির ছায়াসঙ্গী ছিলেন। পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁকেই প্রার্থী করেছে সংযুক্ত মোর্চা। তাঁকে জেতাতে রাহুল গাঁধীকে এনে প্রচারও করান দীপা। মাসুদের কথায়, ‘‘গোয়ালপোখর কংগ্রেসের ঘাঁটি। শাসক দলের অত্যাচার, অনিয়মের বিরুদ্ধে মানুষ জোটবদ্ধ।’’
রব্বানির লড়াই ঘরেও। বিজেপি প্রার্থী গোলাম সরবর তাঁর ভাই। রব্বানি বলেন, ‘‘উন্নয়ন কী হচ্ছে মানুষ জানেন। জয় নিশ্চিত।’’ ভাই নিয়ে প্রতিক্রিয়া, ‘‘কখনও দেশ, কখনও মানুষের ঘর ভাঙার চেষ্টা করছে।’’ তবে গোলামের কথায়, ‘‘শাসকদলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষই ভোটে নামার অনুরোধ করেছেন।’’ এই বিধানসভা ৭৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট বিজেপির চ্যালেঞ্জ। তায় শীতলখুচি কাণ্ডে এখানে তাদের পালে বাতাস কম। গত লোকসভায় এই বিধানসভা থেকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।
তিন বারের চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) সংখ্যালঘু ভোট টানতে মরিয়া। সংখ্যালঘু ভোটার ৬৪ শতাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী মিরাজুল আরফিন আজাদ এক সময় জেলা পরিষদে সিপিএমের সদস্য পরে কংগ্রেসে যান। এই আসনে তৃণমূলের অন্যতম দাবিদার সেই সিরাজুল ইসলামও রয়েছেন। ভিক্টরকে প্রচারে বলতে শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল থেকে নেতারা বিজেপিতে যাচ্ছেন। তাই তাদের জেতালে পরে দল ত্যাগ করবেন না সে নিশ্চয়তা নেই। বরং ভিক্টরকে জেতালে প্রয়োজনে তারা তৃণমূলে সমর্থন দেবেন। ভিক্টর বলেন, ‘‘মানুষ সঙ্গে আছে, থাকবেও।’’ মিরাজুলও বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে।’’ গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার বিজেপিও। প্রার্থী হওয়ার পর দিন দশেক এলাকায় ঢুকতে পারেননি চিকিৎসক সচিন প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের সেবা করতে গিয়ে ভেদাভেদ আমার নেই।’’
করণদিঘি আসনে বিদায়ী বিধায়ক মনোদেব সিংহ টিকিট পাননি। পিকে’র টিম মনোদেবের বিরোধী যুব নেতা গৌতম পালকে টিকিট দিয়েছে। মনোদেব নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে গৌতম ঘনিষ্ঠ একদা তৃণমূল জেলা সম্পাদক হাফিজুল ইকবাল ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগ দেন। ২০০১-২০১১ পর্যন্ত এই আসনে জিতেছেন ব্লকের গোকুল রায়। হাফিজুল গৌতমের বিরুদ্ধেই লড়াইতে নেমেছেন। এলাকায় সংখ্যালঘু ভোট ৫০ শতাংশের বেশি। গৌতম বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থেকেছি। সমর্থনও পাব।’’ হাফিজুল বলেন, ‘‘ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি এটি। সঙ্গে কংগ্রেসের সমর্থকরাও রয়েছেন।’’
গত লোকসভা ভোটে বিজেপি এই আসনে অনেক এগিয়ে ছিল। রাজবংশী ভোট রয়েছে ৩০ শতাংশ। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সিংহ বলেন, ‘‘লোকসভার থেকে সংগঠন আরও মজবুত। বিরোধীদের নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে।’’ নির্দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন সুভাষ সিংহ। নাম বিভ্রান্তিতে ক্ষতি হয় কিনা, তা নিয়ে চিন্তায় বিজেপির সুভাষ।