কড়াকড়ি: কলকাতার তিন বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের আগে পুিলশের নাকা-তল্লাশি। শনিবার, পার্ক স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় কড়া নজরদারি চালাতে হবে। জমায়েত হলে তা দ্রুত সরিয়ে দিতে হবে। কাল, সোমবার শহরের ভোট-পর্বের নজরদারিতে এই গতি আনতেই মোটরবাইক বাহিনীকে এ বার পথে নামাচ্ছে লালবাজার।
সেই দলে মূলত সার্জেন্টরা থাকবেন। তিন থেকে চার জন অফিসার এক-একটি বাইক চেপে অলিগলি ঘুরবেন। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গী হবেন এক জন করে পুলিশকর্মী। বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের ২১৬ জন সার্জেন্ট বা অফিসারকে ওই দিন রাস্তায় নামানো হচ্ছে। যাঁদের দেখাশোনা করবেন আট জন এসি (অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার)।
লালবাজার সূত্রের খবর, কাল, সোমবার সপ্তম দফার নির্বাচনে কলকাতা পুলিশ এলাকার বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, রাসবিহারী এবং কলকাতা বন্দর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট। যার বিস্তার ২৫টি থানা এলাকা নিয়ে। ওই চার কেন্দ্রের মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ৪২৮টি। মোট বুথ ১২৫৪টি। সব বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুথের একশো মিটারের বাইরের এলাকার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের হাতে। সূত্রের খবর, ওই একশো মিটারের বাইরের চৌহদ্দিতে যাতে গোলমাল বা জমায়েত না হয়, তার জন্যই ওই বাহিনীকে নামানো হচ্ছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, ওই দিন ভোটগ্রহণ শুরুর আগে থানায় রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে সার্জেন্টদের। যাতে বুথের একশো মিটারের বাইরে কোনও জমায়েত না হয়, তা দেখার জন্য সার্জেন্টদের নিয়ে ছোট দল বানানো হয়েছে। ভোটের দিন তাঁদের নেতৃত্ব দেবেন এক জন করে ট্র্যাফিক পুলিশের এসি। সার্জেন্টদের একটি দলকে দু’টি বা তিনটি করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হবে।
পুলিশকর্তাদের অনুমান, একসঙ্গে তিনটি বা চারটি মোটরবাইক নিয়ে অফিসারেরা এলাকায় ঘুরলে গোলমাল বা বেআইনি জমায়েত কমবে। বাইকে থাকায় দ্রুত যে কোনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়া যাবে। পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা খবর দিলে সেক্টর মোবাইল বা কিউআরটি সেখানে পৌঁছে যাবে। তবে আগে মোটরবাইক বাহিনী অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করবে।
ভোটের প্রচার শুরুর পর থেকে ভবানীপুর এবং বন্দর কেন্দ্রের অধীন একাধিক এলাকায় রাজনৈতিক গোলমাল হয়েছে। ভোটের দিন সে সব ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ পুলিশের। সেই জন্যই আজ, রবিবার থেকে ওই ২৬টি থানায় এক জন করে এসি-কে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। ভোটপর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্বে থাকবেন তাঁরা।
লালবাজার জানিয়েছে, শহরে ঢোকা এবং বেরোনোর পথগুলিতে আগে থেকেই নাকা-তল্লাশি শুরু হয়েছে। ভোটের দিন পর্যন্ত যা বহাল থাকবে। গোলমালের আশঙ্কায় কাল রাস্তায় থাকবে ৮৮টি সেক্টর মোবাইল, ৭৮টি আরটি ভ্যান। এগুলিতে কলকাতা পুলিশের বাহিনী থাকলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য থাকছে ৫৭টি কিউআরটি। আজ থেকেই শহরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ টহল দেবে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, আগের দফাগুলির মতো এ বারেও ১২ জন ডিসি-কে যে সব থানা এলাকায় ভোট হবে তার দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
জেলায় জেলায় ভোটকে কেন্দ্র করে গোলমালের ঘটনা ঘটলেও কলকাতা পুলিশ এলাকার গত দুই দফায় বড় সংঘর্ষ হয়নি। তাই শান্তিপূর্ণ ভাবে সোমবারের ভোটগ্রহণ শেষ করতে লালবাজার আশাবাদী।