West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: মীনাক্ষীতে মজেছে আট থেকে আশি

রণভূমিতে রয়েছেন দুই ‘পরাক্রমী যোদ্ধা’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের উপস্থিতিতেই যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের অস্বিত্ব জানান দিচ্ছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়

Advertisement

কেশব মান্না

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ০৭:০২
Share:

ভোট প্রচারে মীনাক্ষী। নিজস্ব চিত্র

‘যুদ্ধক্ষেত্রে’র নাম নন্দীগ্রাম। সেই রণভূমিতে রয়েছেন দুই ‘পরাক্রমী যোদ্ধা’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। আর তাঁদের উপস্থিতিতেই যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের অস্বিত্ব জানান দিচ্ছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়— নন্দীগ্রামে এবারের ভোটে সংযুক্ত মোর্চার শরিক সিপিএমের প্রার্থী।

Advertisement

গত কয়েক সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী মমতা এবং বিজেপি’র প্রার্থী শুভেন্দুর বিশাল কনভয় যখন জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর চষে বেড়াচ্ছে, তখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন বামেদের এই যুব নেত্রী। তাঁকে কাছে পেয়ে গত পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারার ক্ষোভ জানাতে গিয়ে নন্দীগ্রামের মহিলাদের একাংশের চোখে আসছে জল। তো যুবকদের একাংশ রাজ্যে কর্মসংস্থান না হওয়ায় কীভাবে তাঁদের ভিন্‌ রাজ্যে যেতে হচ্ছে, সে কথা শোনাচ্ছেন। রতনপুর থেকে টাকাপুরা, ভেকুটিয়া থেকে বাড়কান্ড পসরা, রেয়াপাড়া থেকে গোপালপুর-সব জায়গাতেই ভোটারদের কাছে পৌঁছতে ছুটছেন মীনাক্ষী। তাঁর কথাবার্তায় মজেছেন বিরোধী দলের বহু স্থানীয় নেতা-সহ নন্দীগ্রামের আট থেকে আশির মানুষজন।

জমি আন্দোলন পর্বের প্রত্যাহার করা কয়েকটি মামলা সম্প্রতি হলদিয়া মহকুমা আদালত হাইকোর্টের নির্দেশে পুনর্বহাল করেছে। তাতে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আবার শুভেন্দুর নির্বাচনী এজেন্ট মেঘনাদ পাল জমি আন্দোলনের যে সব মামলায় অভিযুক্ত ছিল, সেই মামলাগুলি প্রত্যাহার করা হলেও সেই রায়ের বিরুদ্ধে যায়নি বিজেপি। ওই দু’টি বিষয়কে হাতিয়ার করে গত সোমবার থেকেই নন্দীগ্রামে প্রচার চালাচ্ছে বামেরা। পাশাপাশি, ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া, দুর্নীতি, নন্দীগ্রামে কর্মসংস্থানের সুযোগ না হওয়ার সংক্রান্ত বিষয়েও প্রচার চালানো হচ্ছে।

Advertisement

দিন কয়েক আগে ভেকুটিয়া এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন মীনাক্ষী। তাঁকে দেখতে পেয়ে এলাকার কয়েকজন মহিলা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছিলেন। এমনকী, এক মহিলাকে সিপিএম প্রার্থীর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেল। টাকাপুরাতে একাধিক গ্রামে গিয়ে মীনাক্ষী বোঝাচ্ছেন যে, নন্দীগ্রামের ছেলেদের এখন পর্যন্ত ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। জেলা তথা রাজ্যে কোনও কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। আবার কোথাও বয়স্কদের কাছে গিয়ে সিপিএম প্রার্থী বলছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের চাষিরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।’’

শুভেন্দু এবং মমতাকে কটাক্ষ করে মীনাক্ষী বলছেন, ‘‘এঁরা দুজনেই নন্দীগ্রাম থেকে লুটে নিয়ে গিয়েছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএমের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছিল শাসকদল, তা মানুষ এখন বুঝতে পারছেন। তৃণমূল ও বিজেপি’র শুধু মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট নয়, সেই দলের সহ যারা প্রচার করছেন তাঁদের মধ্যে সিংহভাগ লোকই দুষ্কৃতী।’’

মীনাক্ষীর প্রচারে যুক্তি রয়েছে বলে মানছে বিরোধীরাও। নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা তথা স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি একমাত্র মীনাক্ষী তুলে ধরতে পারছেন। তার বক্তব্যে আমাদের অবস্থা আমরা অনুভব করতে পারছি।’’ স্থানীয় সিপিএম নেতা মহাদেব ভূঁইয়া বলেন, ‘‘ভোটের প্রচারে তৃণমূল এবং বিজেপির ভাওতাবাজি জনসমক্ষে তুলে ধরার ক্ষেত্রে মীনাক্ষী একেবারে যোগ্য।’’

মিনাক্ষীর বিরোধী নেতাদের কটাক্ষ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর নির্বাচনী এজেন্ট মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’ মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষের ওপর সিপিএম যে অত্যাচার করেছে, তা মীনাক্ষীর জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement