Khardaha

WB Election Result: জয় দেখা হল না কাজলের, উচ্ছ্বাসের দিনেও নীরব খড়দহ

তাই রবিবার দুপুর থেকে জয়ের খবর এলাকায় পৌঁছলেও, দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা উচ্ছ্বাসের বদলে চোখের জল ফেলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২১ ০৬:০৪
Share:

শোক: কাজল সিংহের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন তৃণমূল কর্মীদের। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

এলাকা জুড়ে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। পাড়ার মোড়ে মোড়ে জটলা। কিন্তু কারও মুখে কোনও উচ্ছ্বাস নেই।

Advertisement

রাজ্যে জুড়ে যখন প্রায় জোড়া ফুলের দমকা হাওয়া বইছে, তখন এখানে সকলে বিমর্ষ কেন? যদিও ফলাফল বলছে, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ বিধানসভায় ২৮,০৪১ ভোটে জিতেছে তৃণমূলই। তা হলে? উত্তর মিলল রহড়া স্টেশন রোড ধরে কিছুটা এগোতেই। প্রায় প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ের সামনেই তাঁকে মালা পরানো হচ্ছে। কপালে আঁকা হচ্ছে সবুজ আবিরের তিলক। তবে সব কিছুই ছবিতে! কারণ খড়দহ রাজ্যের একমাত্র বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে ভোটের দিন কয়েক পরে করোনায় মৃত্যু হয়েছে সেখানকার শাসক দলের প্রার্থী কাজল সিংহের।

তাই রবিবার দুপুর থেকে জয়ের খবর এলাকায় পৌঁছলেও, দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা উচ্ছ্বাসের বদলে চোখের জল ফেলেছেন। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও ফাঁকাই থেকেছে রাস্তা। সবুজ আবিরের ছড়াছড়ি নয়। বদলে পাড়ার বিভিন্ন মোড়ে জ্বলেছে মোমবাতি। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্য সেন নগরে কাজলের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে এক কর্মী বললেন, ‘‘আজ দাদার গলায় মালা না পরিয়ে ছবিতে পরাতে হবে, এমনটা কোনও দিন কল্পনাও করিনি।’’ যেমনটা আজও ভাবতে পারছেন না শান্তিনগরে কাজলের বাড়ির অদূরে পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়ানো কর্মীরা। প্রত্যেকের আক্ষেপ একটাই, ‘নিজের জয়টা শুনেও যেতে পারলেন না!’

Advertisement

খড়দহের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী নন্দিতা ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

‘‘এই আক্ষেপ বোধ হয় কোনও দিনই যাবে না’’— বলছিলেন কাজলের স্ত্রী নন্দিতা। জানালেন, এক-এক সময়ে স্বামীর উপরে খুব রাগ হত তাঁর। কারণ, খড়দহের ভোট-কাণ্ডারীর তকমা কাজলের গায়ে থাকলেও নিজে কোনও দিন প্রশাসনিক কোনও পদে যেতে পারেননি। বাড়িতে স্ত্রী ও পরিজনেদের কাছে অবশ্য নিজের স্বপ্নের কথা বলতেন কাজল। তাঁর ভাই তাপস বলেন, ‘‘দাদার লড়াইটা দীর্ঘ দিনের। প্রশাসনের কোনও ভাল পদে গিয়ে খড়দহের উন্নয়ন করবে, এটাই ছিল স্বপ্ন।’’ নন্দিতা জানালেন, তিনিও স্বামীকে বলেছিলেন, এ বার টিকিট না পেলে ভোট দিতে যাবেন না। কথাটা শুনে রেগে গিয়েছিলেন কাজল। শেষে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর আসন খড়দহের জন্য বেছে নেন কাজলকে।

কিন্তু শরীরটা ভাল যাচ্ছিল না কাজলের। তাই তাঁকে শেষমেশ ভোটে দাঁড়াতে বারণও করেছিলেন নন্দিতা। কিন্তু নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন কাজল। তাই ভোটের দিন বিকেলেও স্ত্রীকে ফোন করে ভোটের গতিপ্রকৃতি বুঝতে চেয়েছিলেন। এ দিন সেই সব কথাই বার বার মনে পড়ছিল নন্দিতার। বললেন, ‘‘ওঁর স্বপ্ন পূরণে দল যদি আমাকে সুযোগ দেয়, আমি অবশ্যই রাজি হব।’’ বি টি রোড জুড়ে তখন বাজছে ‘খেলা হবে।’ আর খড়দহে দলীয় কার্যালয়ের দেওয়ালে লাগানো ব্যানারে কাজলের ছবির পাশে জ্বলজ্বল করছে, ‘তুমি রবে নীরবে...’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement