Mamata Banerjee

Bengal Polls: কোভিড ছড়াচ্ছে মোদীর সভার আয়োজনে: মমতা

কমিশনের কাছে মমতার দাবি, কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া বাইরের কারও রাজ্যে ঢোকা বন্ধ করা হোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৪:২২
Share:

ফাইল চিত্র।

কোভিডের সংক্রমণ যখন কম ছিল, সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার টিকা-সহ অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থায় নজর দেয়নি। এখন ভোটের সময়ে বাংলায় ‘বাইরের লোক’ নিয়ে এসে কোভিড ছড়ানোর সুযোগ আরও তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা মোদীর প্যান্ডেল বাঁধার লোক বা কেন্দ্রীয় বাহিনী, সকলের থেকেই কোভিড ছড়াতে পারে। কমিশনের কাছে মমতার দাবি, কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া বাইরের কারও রাজ্যে ঢোকা বন্ধ করা হোক।

Advertisement

নদিয়ার নবদ্বীপ, উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া, জগদ্দল ও নোয়াপাড়া— এই চার কেন্দ্রে শুক্রবার সব সভা থেকেই মোদী ও তাঁর সরকারকে করোনা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবদ্বীপে তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ-ছ’মাস কোভিড ছিল না। যখন ছিল না, তখন কিন্তু নরেন্দ্র মোদীরা ইঞ্জেকশন দিয়ে, ওষুধ দিয়ে ভাল রাখতে পারতেন। ওঁরা জানেন, এটা দু’বছর চলবে। কেন ওই কাজগুলো করেননি?’’

তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘‘এখন আবার কোভিড বাড়িয়ে দিয়েছে। আর বাইরে থেকে গুন্ডারা চলে আসছে। কোভিড নিয়ে আসছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর সভার এখানে প্যান্ডেল তৈরি করতে লোক আসছে বাইরে থেকে। হাজার হাজার লোক আসছে ও তারা বাংলার কোভিড ছড়িয়ে দিয়ে পালাচ্ছে।’’ মমতার দাবি, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলব, বহিরাগতদের বাংলায় ঢুকতে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই আসতে পারেন সভা করতে। কিন্তু এখানকার লোক দিয়ে করুক। যাঁরা প্যান্ডেল বানাবেন, তাঁদের কোভিড টেস্ট করা হোক। গুজরাত, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে কেন প্যান্ডেল হবে?’’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাংলাকে বাংলার মতো থাকতে দিন। মোদীজি আপনাকে আমরা বারবার বলছি, বাংলায় কোভিড ছড়াবেন না!’’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেল বাঁধার জন্য বাইরে থেকে যে লোকজনের দিকে মমতা ইঙ্গিত করেছেন, রাজারাম যাদব-সহ তাঁদেরই কয়েক জনের দেখা মিলেছে পশ্চিম বর্ধমানের নিঘায়। সেখানে আজ, শনিবার মোদীর সভার জন্য তাঁরা প্যান্ডেল তৈরি করছেন। রাজারাম বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর একটি সংস্থায় আমরা কাজ করি। চার দিন ধরে এখানে প্রায় আড়াইশো জন কাজ করছি। এর আগে উলুবেড়িয়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেল বাঁধার কাজ করেছি। বছরখানেক আগে তৃণমূলের সভার জন্যও প্যান্ডেল বেঁধেছিলাম।’’ পশ্চিম বর্ধমান জেলা ডেকরেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেলগুলির পোশাকি নাম, ‘জার্মান হ্যাঙ্গার প্যান্ডেল’। এত বিপুল আয়তনের প্যান্ডেল বাঁধার পরিকাঠামো আমাদের জেলায় নেই। তবে কলকাতায় সেই পরিকাঠামো আছে।’’

পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব অবশ্য জানান, এসপিজি-র নির্দেশিকা মেনে, সভার কাজে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সবারই কোভিড-টেস্ট করা হয়েছে।

হাবড়াতেও এ দিন মমতা বলেছেন, ‘‘১০টা রাজ্যে কোভিড বেড়েছে। তার মধ্যে বাংলা নেই। কিন্তু কত দিন ঠেকিয়ে রাখব! মোদী মিটিং করছেন। বাইরে থেকে ১০০০ লোক এসে আয়োজন করছে। বাইরের লোকেরা এসে বসে আছে। হোটেল, গেস্টহাউস ভর্তি। বরিহাগত গুন্ডারা এসেছে। কার কোভিড আছে, কার নেই কী করে বুঝব?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কোনও আরটিপিসিআর মেনে টেস্ট হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় বাহনী আসছে, তাতেও অনেকের কোভিড হয়ে যাচ্ছে। দিল্লিতে, রাজস্থানে, মুম্বইয়ে কোভিড বাড়ছে। তারা এখানে ডিউটি করতে আসছে। কত লোক প্লেনে, ট্রেনে আসছে। এরা ছড়িয়ে দিয়ে পালাবে। আর আমাদের মা, ভাই, বোন মরে যাবে।’’

হাবড়া ও অশোকনগরের দুই তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও নারায়ণ গোস্বামীর মুখে মাস্ক নেই দেখে এ দিন মঞ্চেই মমতা নির্দেশ দেন মাস্ক পরার। একই ভাবে শ্যামনগরের অন্নপূর্ণা কটন মিল মাঠের সভায় জগদ্দল ও নৈহাটির দুই তৃণমূল প্রার্থী সোমনাথ শ্যাম ও পার্থ ভৌমিককে মাস্ক পরতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমরা অনেক দিন আগে চিঠি লিখেছিলাম যে, কোভিডের ওষুধের জন্য আমাদের অনুমতি দেওয়া হোক। আমরা বিনা পয়সায় সবাইকে কোভিড ইঞ্জেকশন দিয়ে দেব। সেটাও আপনি দেননি। কেন দেননি, জানি না! রাজনীতি ছাড়া কিছু করেননি। তবুও আমাদের কাছে যা ভ্যাকসিন আছে, কলকাতা থেকে কিছু কিছু জায়গায় বিনা পয়সায় দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী দিনেও যে রকম পাব, ভ্যাকসিন দিয়ে দেব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement