West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: সংঘর্ষ-ইটবৃষ্টি, অফিস ভাঙচুরে মিটল ভোট

গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত ও সুদিন মণ্ডল

বর্ধমান ও মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:১০
Share:

বর্ধমানের পারাপুকুরে, গোলমালের পরে। ছবি: উদিত সিংহ।

সকাল থেকে শান্তই ছিল বর্ধমান শহর। বেলা বাড়তেই বিজেপির বুথ অফিস ভাঙচুর, পাল্টা তৃণমূলের ওয়ার্ড কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। নীলপুর এলাকা থেকে পুলিশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজও উদ্ধার করেছে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

শনিবার এই কেন্দ্রে প্রথম গোলমালের খবর আসে দুবরাজদিঘি থেকে। এক বিজেপি কর্মীর মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তারপরেই নীলপুরে এক বিজেপি নেতা বারবার বুথে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন, অভিযোগ করে তৃণমূল। এই ঘটনাকে ঘিরে নীলপুরের চৌরঙ্গি মোড়ের কাছে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। দু’পক্ষই পতাকা ছেঁড়েন বলে অভিযোগ। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় ইটের টুকরো, দলীয় পতাকা ছিটিয়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ ও বাহিনী পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে। ঘটনাস্থল থেকে মেলে আগ্নেয়াস্ত্র।

বিকেলে অশান্তি বাধে বর্ধমান শহরের জেএন মিত্র লেনের পারাপুকুরে। বিজেপির অভিযোগ, তাদের ৯৪ নম্বর বুথ ক্যাম্পে তৃণমূল হামলা চালায়, ভেঙে দেয়। সেখানে বসে থাকা এক কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারা হয় বলেও অভিযোগ। আহত নিরঞ্জন মল্লভের দাবি, ‘‘তিনটে মোটরবাইকে ন’জন তৃণমূলের ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে আসে। লাঠি-রড দু’জনকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। বাকিদের অস্ত্র দেখালে তাঁরা প্রাণের ভয়ে পালায়।’’ দু’দলের নেতারাই ঘটনাস্থলে যান। বচসা বাধে। বিজেপির দাবি, কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি পাশাপাশি বসে ভোট করেছে এই এলাকায়। কোনও দিন গোলমাল হয়নি। অথচ, তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের উস্কানিতে বাইরের লোক এসে হামলা চালাল! তৃণমূলের নেতাদের পাল্টা, তাঁরা এই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানেন না। কেন এমন হল, খোঁজ করা হচ্ছে।

Advertisement

কথা-কাটাকাটির মাঝেই বিজেপি লোকেরা সাত নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে, অভিযোগে তৃণমূলের অভিযোগ। বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস বলেন, ‘‘হেরে যাচ্ছে বুঝে বিজেপি সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশ দেখেও চুপ। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বাহিনী অত্যাচার করেছে।’’ এ দিন বিকেলে জওয়ানদের ঘিরে বিক্ষোভও হয় নীলপুরে। বিজেপি নেতা, বর্ধমান দক্ষিণের প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ শান্তিতে ভোট দিচ্ছেন দেখে তৃণমূল বিভিন্ন জায়গাতে সন্ত্রাস করার চেষ্টা করেছে। নির্বাচন কমিশন সজাগ থাকায় প্রতিরোধ হয়েছে।’’

মন্তেশ্বরের রাইগ্রামেও তৃণমূল-বিজেপি ‘সংঘর্ষে’ তিন জন বুথ এজেন্ট-সহ দশ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মন্তেশ্বরে তৃণমূল প্রার্থী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির টাকা খেয়ে বিজেপি ও সিপিএম যৌথ সন্ত্রাস চালিয়েছে।’’ অভিযোগ মানেনি দু’দলই।

তৃণমূলের অভিযোগ, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট চলছিল। ভোটে হার নিশ্চিত বুঝে বিজেপির দলবল বাঁশ, রড নিয়ে হামলা চালায়। ১১৯ নম্বর বুথের তৃণমূল এজেন্ট মোজাফ্ফর আলী শাহ-সহ তিন তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। বিজেপি নেতা বাবর আলি শেখের পাল্টা দাবি, তৃণমূল কর্মীদের মারধরে ১২০ ও ১২৩ নম্বর বুথ সভাপতি মিন্টু খান ও আবু শেখ-সহ সাত জন দলীয় কর্মী আহত হয়েছেন। বিজেপি কর্মী কিতাবুল খানের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য ওসমান গনি সরকারও অভিযোগ করেন, সন্ত্রাস করে তৃণমূল এজেন্ট বসাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ, বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement