সপ্তম দফায় মালদহের তিনটি বিধানসভার ইভিএম মেশিন জমা দিতে গভীর রাত হয়ে যায়। মাস্কও ছিল না অনেকের। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের সকালেই বালুরঘাটের আশুতোষ গার্লস স্কুলের বুথের ভিড়ে সামাজিক দুরত্ববিধি উধাও হয়েছিল। দিনভর করোনা সুরক্ষা-বলয় ভেঙে পড়ার ওই ছবি কেবল দক্ষিণ দিনাজপুরে বুথেই নয়, ডিসিআরসি কেন্দ্রেও গভীর রাত পর্যন্ত সমান তালে চলেছে। ভোট প্রচার পরবর্তী সময় থেকে জেলায় হু হু করে বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ। করোনায় মৃত্যুও ঘটছে। স্বাস্থ্য দফতর সূ্ত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কুমারগঞ্জ এলাকার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তাপসকুমার রায় (৭২) এবং মাসুদ সরকার (৩৭) নামে এক প্রাথমিক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে।
ভোট প্রচারে জনসভা, রোড-শো, মিছিলে মাস্ক ছাড়াই ভিড়ের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ববিধি না মানার যে প্রবণতা শুরু হয়েছিল, সোমবার ভোটের দিনও তা সমানতালে বহাল ছিল। অনেক সচেতন নাগরিক এতে উদ্বিগ্ন। তাঁরা জানান, একাধিক বুথের সামনে ছাউনি ছিল না। আবার অনেক বুথের সামনে তৈরি ছোট্ট ছাউনি ভোটারদের ছায়া দিতে পারেনি। তাই প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে তপন বিধানসভার রঘুনাথপুর বিএম হাইস্কুলের বুথের সামনে গোল দাগের লক্ষ্মণ রেখা ছেড়ে ছাউনির তলায় ভিড় জমান ভোটাররা। কিন্তু ছোট্ট ছাউনির মধ্যে গাদাগাদি ভিড়ে যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে তা নিয়ে প্রশাসনের হেলদোল ছিল না বলে অভিযোগ।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘দূরত্ববিধি নিয়ে এখনও মানুষ সচেতন না হলে কি করার আছে! তবে বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সুরক্ষাবিধি বজায় রাখতে বলা হয়েছিল। মাস্ক, স্যানটাইজ়ার ও প্লাস্টিকের গ্লাভসও সরবরাহ করা হয়েছিল।’’
কিন্তু কুমারগঞ্জের রাধানগর ১৭৭ নম্বর বুথের মত জেলার অধিকাংশ বুথে দুপুর না গড়াতেই মাস্ক শেষ হয়ে যায়। বুথের স্বাস্থ্যকর্মীরা মাস্ক চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ। ওই বিধানসভা এলাকার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের ৭৮ নম্বর বুথেও একই বিধি না-মানার দৃশ্য ভোট প্রক্রিয়ায় যুক্ত আধিকারিকদেরও নজর এড়ায়নি।
তপনের গঙ্গারামপুর কেন্দ্রের ১২৭ নম্বর বুথের সামনে মহিলাদের গাদাগাদি লাইনে মাস্ক না পরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জবা, গীতা বর্মণেরা। বাড়িতে মাস্ক ভুলে রেখে এসেছেন বলে জানান তাঁরা। বুথের স্বাস্থ্য কর্মীরা তাঁদের মাস্ক দিতে পারেননি। একাধিক বুথের সামনে একটি লাইনে ১০ থেকে ১২টি লক্ষ্মণ রেখার পর আর বৃত্ত টানা ছিল না। সেখানে বাড়ে ভিড়। তাতেও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েছে। জেলা নির্বাচনী আধিকারিক সি মুরুগান বলেন, ‘‘করোনা সুরক্ষাবিধি মেনে ভোটগ্রহণ ও ইভিএম জমা দেওয়ার জন্যই সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল।’’