সভাস্থলের কাছেই নামবে প্রধামন্ত্রীর কপ্টার। শুক্রবার চলল মহড়া। দেবরাজ ঘোষ
এই মাঠেই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসেছিলেন তিনি। দুই জেলায় একমাত্র রেলশহরেই ফুটেছিল পদ্ম। বিধানসভা উপ-নির্বাচনের পরে অবশ্য গোটা জেলা এখন তৃণমূলের দখলে। তাই ‘পরিবর্তনে’র ডাক দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ১৯জন বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে এ বার ফের রেলশহরের বিএনআর ময়দানেই সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ, শনিবার ওই সভায় দেড় লক্ষ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে গেরুয়া শিবির।
খড়্গপুর সদরে এ বার পদ্ম-প্রার্থী অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সমর্থনে ইতিমধ্যে রোড শো করে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার আসছেন মোদী। তবে খড়্গপুর শহরে জনসভা হলেও মঞ্চে দুই জেলার ১৯জন প্রার্থীই হাজির থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর সভা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতা তথা রাঢ়বঙ্গের মুখপাত্র তুষার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি মানুষের কাছে আশীর্বাদ চাইতে আসছেন। দুই জেলা মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে বলে আশা করছি। ২০১৬ সালের অবস্থা আলাদা। এ বার তো পরিবর্তনের পরিবর্তন হবে। মোদীজির এই সভার পরে দুই জেলার প্রতিটি আসনে আমাদের জয় নিশ্চিত হয়ে যাবে।” যদিও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির খোঁচা, “নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির নেতারা যে ভাবে বাংলাকে ধ্বংস করতে চাইছে সেটা মানুষ মেনে নিচ্ছে না। তাই মাঠ ভরাতে দুই জেলা থেকে লোক আনছে। এতেই ওঁদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। ২০১৬ সালে তবুও একটা আসন পেয়েছিল। এ বার সেটা শূন্য হয়ে যাবে।”
মোদীর সভার প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখছে না বিজেপি। রেলশহরে বিএনআর ময়দানের মাঝে প্রায় ন’শো বর্গফুটের সভামঞ্চ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, মঞ্চের পিছনে নামবে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। শুক্রবার সেখানেই তিন দফায় হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক অবতরণ করা হয়। যদিও তার পরেই দেখা যায় বিপত্তি। হেলিকপ্টারের হাওয়ায় কাঁপতে থাকে বিশালাকার মঞ্চ। এর পরেই সিদ্ধান্ত বদল করে শহরের ট্রাফিক ময়দানে হয় হেলিপ্যাড। ঠিক হয়েছে, সেখানেই নামবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ হেলিকপ্টার-সহ তিনটি হেলিকপ্টার। পরে গোলবাজারের রাস্তা ধরে কনভয়ে বেলা ১১টা নাগাদ বিএনআর ময়দানে সভামঞ্চে পৌঁছবেন নরেন্দ্র মোদী। সভামঞ্চের পিছনে তাঁর বসার জন্য ঘর ও শৌচাগারের বন্দোবস্ত হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে চা, নোনতা বিস্কুট ও ডাবের ব্যবস্থা।
মোদীর সঙ্গেই মঞ্চে থাকবেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, ১৯জন প্রার্থী-সহ ৩৩জন। কেন্দ্রের ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ বা ‘এসপিজি’ গোটা নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন। মঞ্চে যাঁরা থাকবেন তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষা চ্ছে। সভায় আসা প্রত্যেকের হবে থার্মাল স্ক্রিনিং। পরতে হবে মাস্ক। চারটি গেটে হবে তল্লাশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবারই রাজ্য পুলিশের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক বৈঠক হয়েছে। রাজ্য পুলিশের প্রায় ৬০জন ইন্সপেক্টর, ৩০জন ডিএসপি, ১৬জন আইপিএস সহ প্রায় ৬০০জন পুলিশকর্মী মোতায়েন হচ্ছে। গোটা বিষয়টি দেখভাল করছেন রাজ্যের এডিজি (পরিকল্পনা) রাজীব মিশ্র। ট্রাফিক ময়দান থেকে সড়কপথে বিএনআর ময়দানে আসার জন্য রাস্তায় দু’ধারে গার্ডরেল দিয়ে চ্যানেল হচ্ছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। প্রধানমন্ত্রীর সফরে নিরাপত্তার আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।”