শিক্ষক শেখ মনসুর আলির বাড়ি। মমতার থাকার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এই বাড়িটি। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী হচ্ছেন দিদি। বাড়তি আবেগে ফুটছে নন্দীগ্রাম। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থাকার জায়গাও তৈরি।
গত জানুয়ারিতে নন্দীগ্রামের তেখালির সভা থেকেই মমতা জানিয়েছিলেন, এ বার বিধানসভায় লড়বেন জমি আন্দোলনের এই মাটি থেকেই। সেই মতো শুক্রবার প্রার্থী ঘোষণার পরে তৃণমূল নেত্রী জানান, ১০ মার্চ মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে খবর, ৯ মার্চ হেলিকপ্টারে নন্দীগ্রামে চলে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক অফিসের পাশে হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে।
ভোট-পর্বে নন্দীগ্রামে এসে নেত্রী ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা কোথায় থাকবেন, সে জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই ভাড়া বাড়ি দেখা চলছিল। সব মিলিয়ে দলের তরফে চারটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রামের বড়তলায় যে দোতলা বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে, সেখানেই মমতার থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। ওই বাড়ির মালিক ফারুক আহমেদ জানালেন, ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা তাঁর বাড়িতে এসে সব ঘুরে দেখেও গিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রও মানছেন, ‘‘নন্দীগ্রাম বিধানসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই কলকাতা
থেকে বহু নেতানেত্রী আসবেন। তাঁদের থাকার জন্য বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফারুকের বাড়িতেই নেত্রীর থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তারাচাঁদ বাড়ের শিক্ষক শেখ মনসুর আলিও বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন তৃণমূলকে। ছিমছাম এই বাড়িটি পছন্দ হয়েছে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। তবে চারদিকে সবুজ ঘেরা এই বাড়ি মমতারও পছন্দ হতে পারে, এমন সম্ভাবনায় সব প্রস্তুতি সারা হচ্ছে। মনসুর জানাচ্ছেন, দোতলায় মোট চারটে ঘর, দুটো শৌচালয়, একটা রান্নাঘর রয়েছে। নীচের ঘরে স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন মনসুর। বাড়ির চারপাশে সবুজ গাছগাছালি। পিছনের দিকে সবেদা বাগান, পেয়ারা আর ডালিম গাছ। তারপর শুধু দিগন্ত বিস্তৃত খেত।
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর প্রকৃতি ভালবাসেন। তিনি ঠিক যেমন পরিবেশ পছন্দ করেন, ওই বাড়িতে সে রকমই সব কিছু রয়েছে। তাই এই বাড়িটিও পরিষ্কার করা হচ্ছে।’’ মনসুরের বাড়ি থেকে সামান্য দূরে তৃণমূল নেতা তথা মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের বাড়ি।
তাই নির্বাচনী কাজকর্ম সামলাতেও সুবিধা হবে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
মমতার সমর্থনে নন্দীগ্রাম-১ ও ২ ব্লক জুড়ে দেওয়াল লিখনের কাজ প্রায় শেষ। দলনেত্রীর নির্বাচনী প্রচার সূচিও সাজিয়ে ফেলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জানা যাচ্ছে, ১০ মার্চ হলদিয়ায় মহকুমাশাসকের কাছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের কর্মীদের নিয়ে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক অফিসের কাছে কর্মিসভা করতে পারেন মমতা। এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সে দিন প্রার্থনাও করার কথা তাঁর। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, ‘‘দলনেত্রীর কর্মিসভা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার যাবতীয় আয়োজন সারা হচ্ছে।’’