কালনার সভায়। নিজস্ব চিত্র।
টেট-কেলেঙ্কারির অভিযোগে কালনার বিদায়ী বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে গ্রেফতার করা হল না কেন, প্রশ্ন তুললেন নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী তথা ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে মন্তেশ্বরের সিপিএম প্রার্থী অনুপম ঘোষের সমর্থনে মেমারির সাতগেছিয়ায় সভা করেন তিনি। সন্ধ্যায় সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের সমর্থনে কালনার ধাত্রীগ্রামে সভা করে মীনাক্ষী বিজেপি এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেন।
সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কালনার বিদায়ী বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবুর বিরুদ্ধে টেট-কেলেঙ্কারির অভিযোগে সরব হয়েছে তাঁর পুরনো দল। এ বার কালনায় বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেছে। কয়েকদিন আগে বিশ্বজিৎবাবুর বিরুদ্ধে টেট-দুর্নীতির অভিযোগে এলাকায় পোস্টারও পড়ে। দলবদলের পরে বিশ্বজিৎবাবু দাবি করেন, তিনি যা করেছিলেন, তা তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশেই। এ দিন সেই প্রসঙ্গ উস্কে মীনাক্ষী দাবি করেন, “কালনার বিধায়ক বলছেন, আমি একা করিনি। বীরভূমের বাবুকে পয়সা দিয়েছি, মেদিনীপুরের বাবুকেও পয়সা দিয়েছি। কালীঘাটের দিদিকেও ভাগ দিয়েছি। তিনি নিজে এ কথা বলছেন। আমরা তো বলিনি।’’ এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, “নিজের মুখে বলার পরেও তাঁকে গ্রেফতার করা হল না কেন? যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছে, তাদের চাকরি আজ পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হল না কেন? ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? ঘুষ দিয়ে চাকরি পেতে হবে কেন?’’
সাতগেছিয়া এবং ধাত্রীগ্রাম, দু’টি সভাতেই তৃণমূলের সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগে সরব হন মীনাক্ষী। তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজ কমাতে চাইছে, তৃণমূল একশো দিনের কাজ থেকে কাটমানি চাইছে, আর বামেরা দেড়শো দিনের কাজ চাইছে।’’ দলের কর্মীদের তাঁর পরামর্শ, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল লড়তে পারবে না। কেউ নবান্নে পাঠাতে পারবে না। আমরা বুথ দখল করতে দেব না, বুথকে আগলে রাখুন। নন্দীগ্রাম পেরেছি। এখানেও পারতে হবে।’’ ধাত্রীগ্রামে পূর্বস্থলী দক্ষিণের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও কালনার সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁয়ের সমর্থনে এই সভায় ছিলেন সিপিএম নেতা-নেত্রী অঞ্জু কর, সুকুল শিকদার, কংগ্রেসের মহকুমা সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলেরা।
কালনার বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, ‘‘টেট দুর্নীতিতে গ্রেফতার করতে হলে তৃণমূল নেতাদের করতে হয়। আর
সিপিএমের কেলেঙ্কারি বলতে গেলে রাত কাবার হয়ে যাবে।’’ মীনাক্ষীর ‘কাটমানি’-অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘উন্নয়নের নিরিখে মানুষ এ বার ভোট দেবেন। সিপিএমের অস্তিত্ব নেই। ওদের অপপ্রচারে কেউ কান দেবে না।’’