ফাইল চিত্র।
তিনি এ বার ভোটে লড়েননি। কিন্তু এ বারেও তিনিই অর্থমন্ত্রী হতে চলেছেন।
গত দু’বারের মতো তৃতীয় দফার সরকারেও অমিত মিত্রকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেবেন বলে স্থির করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, অমিত মিত্র রাজি হয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে, রবিবার শপথ নেবেন।
তৃণমূল যে নবান্নে ফিরছে, তা নিশ্চিত হওয়ার পরে যে প্রশ্নটি সব চেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে, তা হল, এ বার অর্থমন্ত্রী কে? ২০১১ সাল থেকে টানা দশ বছর অর্থ দফতরের ভার সামলেছেন অর্থনীতির প্রাক্তন অধ্যাপক ও বণিকসভা ফিকি-র প্রাক্তন মহাসচিব অমিত। রাজ্যের কোষাগারে অর্থের সংস্থান এবং খরচ সামলানোর ক্ষেত্রে তিনি মমতার যথেষ্ট আস্থাভাজন। এমনকি টাকা-পয়সা নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রের কাছে দরবার করতেও বিভিন্ন সময়ে তাঁকেই এগিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই অমিত মিত্র এ বার ভোটে লড়েননি। স্বাস্থ্যের কারণে অব্যাহতি চেয়েছিলেন মমতার কাছে। তৃণমূল নেত্রী সেই অনুরোধ মেনে নেন। অমিতের কেন্দ্র খড়দহে প্রার্থী করা হয় সেখানকার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান কাজল সিংহকে। কাজল ভোটে জিতেছেন। কিন্তু ফল বেরনোর আগেই কোভিডে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। সেখানে আবার ভোট হবে।
অমিতকে ফের কোনও কেন্দ্র থেকে জিতিয়ে বিধানসভায় আনা হবে কি না, সেটি ভবিষ্যতের বিষয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা আপাতত তাঁকে অর্থমন্ত্রী করবেন, এমনটাই সিদ্ধান্ত।
কেন? মমতা মনে করেন, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে অমিতের মতো ‘দক্ষ ও অভিজ্ঞ’ ব্যক্তির খুব প্রয়োজন। সামনে বাজেট। তৃতীয় বারের সরকারে এটিই প্রথম বাজেট। নির্বাচনী ইস্তাহারে বলা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং রাজ্যের চালু প্রকল্পগুলি ঠিকমতো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিশা এই বাজেটে থাকবে। সে ক্ষেত্রে অমিতের ভূমিকা জরুরি। একে পুঞ্জীভূত ঋণের বিপুল বোঝা রাজ্যের কাঁধে। তার উপরে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে খরচ জোগানোর অঙ্গীকার। এই কঠিন ভারসাম্য রক্ষায় অমিতের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপরেই আস্থা রাখছেন মমতা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন জিএসটি পরিষদে সমস্ত রাজ্যের হয়ে দর কষাকষিতেও।
সাধারণত বিধানসভায় নির্বাচিত
না হয়েও ছ’মাস মন্ত্রী থাকা যায়। তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার বক্তব্য, ছ’মাস কোনও চিন্তা নেই। পরের কথা পরে। সূত্রের খবর, ফের মন্ত্রিত্ব নিতে প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না অমিত। তবে মমতা নিজে তাঁকে অনুরোধ করার পরে তিনি রাজি হন।
এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, রবিবার বেলা ১টা ১৫ মিনিটে রাজ্য মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যেরা শপথ নেবেন। তবে প্রথম দফায় সেই তালিকা খুব দীর্ঘ করতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলির মন্ত্রীদের শপথ হওয়ার পরে ধীরে ধীরে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের কথা ভাবছেন মমতা।
গত বারের মন্ত্রীদের মধ্যে যাঁরা এ বারেও জিতেছেন, তাঁদের সবাই নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা না-ও পেতে পারেন। সূত্রের খবর, কলকাতা-সহ কয়েকটি জেলা থেকে মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আনা হতে পারে। মন্ত্রী হিসেবে গতবারের কাজকর্ম খতিয়ে দেখার পরেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের এমন ভাবনা।