মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করে রবিবার সকালে টুইট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখলেন, ‘মডেল কোড অব কনডাক্ট’-এর নাম বদলে ‘মোদী কোড অব কনডাক্ট’ করুক কমিশন। তার পরই তিনি লিখলেন, তিন দিন আটকানো গেলেও চতুর্থ দিন তিনি শীতলকুচি তিনি যাবেনই।
শনিবার চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ চলাকালীন কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভার অন্তর্গত মাথাভাঙায় একটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, রবিবার নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। রাতে নির্বাচন কমিশন জানায়, আগামী ৭২ ঘণ্টা কোনও রাজনৈতিক নেতা কোচবিহারে ঢুকতে পারবেন না। সেই নির্দেশ ঘিরে কমিশনকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটে লিখলেন, ‘মডেল কোড অব কনডাক্ট-এর নাম বদলে মোদী কোড অব কনডাক্ট করে দিক কমিশন’।
রবিবার সকালেই কোচবিহারে যাওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু কমিশনের নির্দেশের পরে তিনি যাবেন না বলেই জানা যায়। তার পরেই টুইট করে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল নেত্রী। টুইটে তিনি লেখেন, ‘বিজেপি নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে পারে, কিন্তু এই পৃথিবীতে কোনও কিছুই আমাকে আমার জনগণের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দুঃখ ভাগ করে নেওয়া থেকে আটকাতে পারবে না।’
কমিশনের নির্দেশ মানলেও মমতা পরে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘ওরা কোচবিহারে আমার ভাই-বোনদের সঙ্গে দেখা করা থেকে আমাকে ৩ দিন আটকাতে পারে। কিন্তু চতুর্থ দিন আমি সেখানে যাবই।’
শীতলকুচির এই ঘটনা নিয়ে রবিবার রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের প্রতিটি ব্লক ও অঞ্চলে কালো ব্যাজ পরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন তৃণমূল কর্মীরা। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগেরও দাবি জানাবেন তাঁরা।
এই টুইটের প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওখানে অবশ্যই যেতে পারেন। তবে নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি মেনে যেতে হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি যান তাহলে কোনও অসুবিধা নেই। বিজেপি সরকার শুধু অনুমতিই দেবে না, ওনাকে সব রকমের সাহায্য করবে। উনি মডেল কোড অফ কনডাক্ট অস্বীকার করছেন। এ কথা তো অনস্বীকার্য যে শীতলকুচির ঘটনার জন্য উনিই দায়ী। উনিই তো মহিলাদের বলেছেন, ঝাঁটা, খুন্তি নিয়ে আদর করে দিতে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, দা, বঁটি নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সবাই ঘিরে ধরেছিল। আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। এক দল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরেছিল, আর এক দল দুর্বৃত্ত ইভিএম লুঠ করার চেষ্টা করে। তাদেরকে আটকাতে গিয়েই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালাতে হয়।’’