প্রতীকী ছবি।
প্রবাদে আছে, ‘নাকের বদলে নরুন’। অর্থাৎ কাঙ্খিত জিনিসের পরিবর্তে স্বল্পকাঙ্খিত জিনিসেই সন্তুষ্ট থাকা। তৃণমূল এবং বিজেপিতে প্রার্থী হওয়ার দাবিদাবেরা বা তাঁদের অনুগামীরা প্রায় একই সুরে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। কিন্তু দুই দলই তাঁদের সেই একই ‘নাকের বদলে নরুন’ সূত্র মেনে শান্ত করেছে। অর্থাৎ সংগঠনে পদ দিয়ে বা পদ না দিয়ে গুরুত্ব বাড়িয়ে দেওয়া।
প্রার্থী ঘোষণার পরে জলপাইগুড়িতে জেলা বিজেপি পার্টি অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলে দেয়। ভাঙচুরকারীদের মুখে ‘দীপেন প্রামাণিক জিন্দাবাদ’ শোনা গিয়েছিল। যদিও বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি দীপেন দলের প্রার্থী নিয়ে বা তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে মুখে রা কাড়েননি। কিন্তু শহরে-গ্রামে তাঁর ছবি-সহ ‘দীপেনদা তুমি এগিয়ে চলো’ লেখা পোস্টার পড়তে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহের দফতর থেকে হস্তক্ষেপে দীপেন দলের প্রার্থীকে জেতানোর কথা বলে সাংবাদিক বৈঠক করেন। গত বৃহস্পতিবার দলে ঐক্যের ছবি তুলে ধরার পরদিনই নয়াদিল্লি থেকে দীপেনকে ‘গুরু’ দায়িত্ব দেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গে ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যতগুলি সভা করবেন তার সবক’টিরই ‘ইনচার্জ’ করা হয়েছে দীপেনকে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর সভা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত রাজ্যে দলের তরফে দীপেনই নেবেন। শিলিগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ-সহ একাধিক জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সভা রয়েছে। সর্বত্র দীপেনকে থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং পরিচালনাও করতে হবে বলে খবর। দীপেন বলেন, “অনেক বড় দায়িত্ব। সারা উত্তরবঙ্গে ছুটতে হচ্ছে। আগেও বলেছি, দলের প্রার্থীদের জেতানোর জন্য সকাল থেকে রাত আমরা সকলে মিলে খাটব।”
একই ভাবে তৃণমূলে রাজগঞ্জে প্রার্থী হতে না পেরে ‘ক্ষুব্ধ’ কৃষ্ণ দাসের অনুগামীকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে, কৃষ্ণকে নির্বাচনী কমিটির প্রধান করা হয়েছে। ধূপগুড়িতে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিংহকে দলের প্রার্থীর এজেন্ট করেছে তৃণমূল। নাগরাকাটায় তৃণমূলের ভোট পরিচালনা কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে অভিমানী সঞ্জয় কুজুরকে। আপাতত সবাইকেই এখন দলের প্রচারে দেখা যাচ্ছে। প্রার্থীর পাশে বসে-দাঁড়িয়ে তাঁরা ছবিও তুলছেন। তাতেই স্বস্তি ফিরেছে দুই দলে। দলের দ্বন্দ্বে মুখ ভার হওয়া কর্মীদের মুখে ফের হাসি দেখা যাচ্ছে। এবং অভিমানী নেতাদের অনুগামীরা আবডালে প্রায় একই সুরে বলছেন, প্রার্থী হওয়া না হয় এ বার হল না। কিন্তু দলে দাদার সম্মান তো আরও বাড়ানো হল। পরের বার দেখা যাবে।