প্রতীকী ছবি।
একদিকে জেলায় দীর্ঘায়িত হচ্ছে করোনা সংক্রমণ অন্যদিকে দোরগোড়ায় জেলায় দু’দফায় নির্বাচন। এই অবস্থায় ইতিমধ্যেই ভোট প্রচারে রাশ টেনেছে নির্বাচন কমিশন। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সমর্থক সহযোগে ভোটপ্রচারের বেলাগাম জনস্রোতে লাগাম টানতে উদ্যত হয়েছে জেলার রাজনৈতিক দলগুলিও। যদিও একাংশ প্রার্থীর মুখে মাস্ক কিংবা স্যানিটাইজার ব্যবহারে তীব্র অনীহা চিন্তায় রেখেছে চিকিৎসক মহলকে। নির্বাচন শুরুর আগেই জেলায় সংযুক্ত মোর্চার দুই প্রার্থীর করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যূর ঘটনাতেও তাঁদের টনক নড়েনি বলেই দাবি চিকিৎসকদের।
কমিশনের নয়া নির্দেশে নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে ভোট প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। সেই হিসাবে জেলায় প্রথম দফা নির্বাচনের আগে আজই শেষ রবিবাসরীয় প্রচারের সুযোগ পাবেন জেলার উত্তর প্রান্তের সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাই। প্রখর রোদের তাপ এড়ানোর পাশাপাশি সর্বাধিক বেশি জায়গা প্রচারের স্বার্থে প্রার্থীরা এর আগের রবিবার সহ সাতদিনই খুব সকালে ভোট প্রচারে ঘুরেছেন মাঠে ময়দানে। কমিশনের নয়া নির্দেশে এ কদিন সকাল দশটার আগে তাঁরা প্রচারে নামতে পারবেন না। ফলে আজ রবিবার জেলায় ভোট প্রচার জমজমাট হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। পাশাপাশি সেখানে কোভিড বিধি শিকেয় ওঠার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
পূর্ব ঘোষণা মত আজ জেলায় তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা করার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়েছে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। কিন্তু বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ঘোষিত সভা বাতিল না করে তাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পথসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জামির মোল্লা বলেন, “মীনাক্ষীর গোয়ালজান সেবা সমিতির মাঠে সভা করার কথা ছিল। তার জায়গায় কিরীটেশ্বরী অঞ্চলে নারকেল বাগানে সকাল দশটায়, তারপর অনন্তপুরে বেলা তিনটেয় শেষে বিকেল পাঁচটায় গোয়ালজানে তাঁর ছোট ছোট সভা হবে।” তবে গোয়ালজান সেবা সমিতির সভার আগে রাধারঘাট অঞ্চলে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীর সমর্থনে সৌরভ পালোধির পথ নাটক ‘হল্লা গাড়ি’ অনুষ্ঠিত হবে। জামির বলেন, “সর্বত্রই আমরা প্রার্থী ও সমর্থকদের করোনা বিধি মানতে বলেছি। মাস্ক পরা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে।”
কমিশনের নির্দেশ লাগু হওয়ার আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনসভা কিংবা রোড শো-তে অংশ নেওয়ার পর জেলায় ফিরে বিশেষ করে বহরমপুর বিধানসভার অন্তর্গত একাধিক জায়গায় পঞ্চায়েত ও পৌর মিলিয়ে অন্তত দুটি করে সভা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আজও তাঁর সভা রয়েছে নওদা ইন্দিরা সুপার মার্কেটে সেখান থেকে ফিরে হরিদাসমাটি এলাকায়। তবে সেখানেও উপস্থিত শ্রোতা সহ দলের নেতা কর্মীদের করোনা বিধি মানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। পথসভা বা জনসভা করার থেকে এই অবস্থায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। সেখানেও কোভিড বিধি মানা হবে বলে বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন।
২০ তারিখ থেকে জেলায় একাধিক নেতা নেত্রী সহ অন্য পেশার মানুষজনের আসার কথা নানা দলের ভোট প্রচারে। সেখানে কোভিড বিধি লঙ্ঘিত হতে পারে বলে সন্দেহ জেলার সব রাজনৈতিক দলেরই। আগামী ২৩ তারিখ নরেন্দ্র মোদীর বহরমপুর স্টেডিয়ামে জনসভা করার কথা। সেখানে সারা জেলা থেকে লক্ষাধিক লোকের জন সমাগম হওয়ার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না জেলা পুলিশ কর্তারা। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “মোদীজিকে বলবো লক্ষাধিক ভ্যাকসিন নিয়ে জেলায় আসুন যাতে মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছয়।”