মনোনয়ন জমা করে ফিরছেন বিনয়। নিজস্ব চিত্র।
বংশ পরম্পরায় তাঁর একাধিক বাড়ি রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দশক ভাড়া বাড়িতেই বাস করছেন তিনি। সাদামাটা জীবনযাত্রায় পরিচিত রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সেই বিনয়কুমার দাস সাড়ে ছয়শো কোটিরও বেশি টাকার সম্পত্তির মালিক। শনিবার কর্ণজোড়ার মহকুমাশাসকের দফতরে তিনি রায়গঞ্জের নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি ৬৫০ কোটি ৮২ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার সম্পত্তি দেখিয়েছেন। অন্যদিকে, এদিন মহকুমাশাসকের দফতরে পৃথকভাবে মনোনয়ন জমা দেন ইটাহারের মিম প্রার্থী মোফাক্কেরুল ইসলাম ও কালিয়াগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী সৌমেন রায়। পাশাপাশি, এদিন রায়গঞ্জের নির্দল প্রার্থী হিসেবে ওই দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা বলে পরিচিত মদন বিশ্বাসও।
প্রসঙ্গত, উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসকের দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বিনয় ২০০৫ সালে অবসর নেন। এর আগে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি রায়গঞ্জের জেলা পরিষদের একটি আসনে এবং ২০১৯ সালে লোকসভায় রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে হেরে যান। লোকসভায় মনোনয়নপত্রের হলফনামাতেও তিনি একই পরিমাণের সম্পত্তির হিসেব দেখিয়েছিলেন।
বিনয় এমসিপিআই তথা নকশাল দলের জেলা সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত সাড়ে ছয়শো কোটিরও বেশি টাকার সম্পত্তি কীভাবে করলেন, তার জবাবে বিনয় বলেন, ‘‘বংশ পরম্পরায় মালদহের বিভিন্ন এলাকায় একশো একরেরও বেশি পরিমাণ জমির উপরে আমবাগান আমার নামে রয়েছে। এ ছাড়াও রায়গঞ্জ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, হরিয়ানা ও বেনারসে আমার ১৪টি পৈতৃক বাড়ি। আমি শখে ভাড়া বাড়িতে থাকি। নির্বাচনে দাঁড়ানোটাও আমার শখ।’’
অন্যদিকে, এদিন ইটাহারের মিমের w হিসেবে মনোনয়নপত্র দিয়ে পেশায় আইনজীবী মোফাক্কেরুল বলেন, ‘‘আইনি পথে ইটাহারের সাধারণ মানুষকে উন্নয়নের অধিকার পাইয়ে দেওয়াই আমার প্রধান লক্ষ্য।’’ পাশাপাশি, কালিয়াগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী সৌমেন এদিন মনোনয়ন দেওয়ার পর এলাকায় নেতা ও কর্মী নিয়ে মিছিল করেন।
বিজেপির ওবিসি মোর্চার জেলার সহকারী সভাপতি মদন বিশ্বাসকে দল রায়গঞ্জের প্রার্থী না করায় তিনি কিছুদিন আগে দলের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সরব হন। এ দিন মদন বলেন, ‘‘রায়গঞ্জের বিজেপির নেতা ও কর্মীদের একাংশের অনুরোধে আমি রায়গঞ্জ থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ীর বক্তব্য, ‘‘দলের কেউ নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’