আমোদপুরে হুমায়ুন কবীর। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে এসে লাভপুরের নির্দল প্রার্থী মনিরুল ইসলামকে কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরানোর স্মৃতিচারণ করলেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবীর।
মঙ্গলবার লাভপুরে তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ সিংহের সমর্থনে ইসলামপুর, ভ্রমরকোল, আদিরাপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রচার করেন তিনি। পাড়ুইয়েও নিতুরি মোড় থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত রোড শো করেন হুড খোলা গাড়িতে চড়ে। মহিলা ও তরুণ প্রজন্মকে তাঁর প্রচারে পা মেলাতেও দেখা যায়। পাড়ুই বাজারে প্রাক্তন পুলিশ কর্তার পথসভায় ভিড়ও হয় গরমকে উপেক্ষা করে। ১১ বছর আগে এই জেলাতেই পুলিশ সুপারের দায়িত্ব সামলেছেন। ফলে জেলার নানা প্রান্তে রাস্তা-ঘাট, মানুষজনের সঙ্গে পরিচিতিও আছে। রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও অতীত সম্বন্ধেও ওয়াকিবহাল। এই কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক মনিরুল এ বার নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে ও সেখান থেকে বিজেপিতে গিয়ে প্রার্থী না হতে পারায় কার্যত মরিয়া হয়েই নির্দল প্রার্থী হওয়া মনিরুল ইসলামকে এক হাত নিলেন হুমায়ুন কবীর। তাঁর কথায়, ‘‘মনিরুল ইসলাম একজন ক্রিমিনাল। ২০১০ সালে এই জেলায় এসপি থাকাকালীন আমিই প্রথম ওকে গ্রেফতার করেছিলাম। কোমরে দড়ি বেঁধে ঘুরিয়েছিলাম। প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। নিজের অপরাধের কথা স্বীকারও করেছিল। আদালতে জামিন মঞ্জুর হয়নি। পালিয়ে বেড়াচ্ছিল, রীতিমতো খবর রেখে ধরা হয়েছিল। কী করে সততার কথা বলে?’’ হুমায়ুন কবীরের দাবি, ‘‘মনিরুল নিজের বাড়ির ভোটটা পাবে কি না সন্দেহ। যেমন তিন জনকে পায়ের তলায় পিষে মারার কথা বলে বেড়ায়, মানুষ ওকে বুঝিয়ে দেবে গণতন্ত্র কাকে বলে।’’
অন্যদিকে, মনিরুল ইসলাম এ দিন হুমায়ুন কবীরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘‘আমি তো এবার নির্দল প্রার্থী, তাহলে আমাকে নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ কিন্তু এখনও প্রমাণিত হয়নি। বাম সরকার ও পুলিশ মিলে তখন আমাকে ফাঁসিয়েছিল। এখন বিজেপিও ফাঁসাতে চাইছে। এ সব করে লাভ কী?’’ প্রচার চলাকালীন বাসিন্দাদের কাছে কী কী সমস্যা, কী প্রত্যাশা সরকারের কাছে সে সবও জানতে চান হুমায়ুন কবীর। তাঁর নিজের কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা এক সময়ের সহকর্মী ভারতী ঘোষের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিন্দনীয় বলে এ দিন জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। তবে ভারতী ঘোষ একজন কালারফুল মহিলা। জানি না উনি প্রচার করতে গিয়ে প্ররোচনামূলক কথা বলেছিলেন কি না।’’
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সদ্য সরানো হয়েছে বীরভূমের পুলিশ সুপার মিরাজ খালিদকে। এ প্রসঙ্গেও প্রাক্তন পুলিশ কর্তার অভিযোগ, ‘‘এসপি মিরাজ খালিদকে সরিয়ে দিয়ে খুব অন্যায় করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি ভেবে থাকে এভাবে রাজ্য পুলিশের মনোবল ভেঙে দেবে, তাহলে ভুল হবে। ভোটটা রাজ্য পুলিশের নেতৃত্বেই হচ্ছে। তাকে সাহায্য করার জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্বাচন যদি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্ভর হয়ে যায় তাহলে শীতলখুচির মতো গণহত্যার ঘটনা ঘটবে। সেই গণহত্যার বিচার হবে। ৩ তারিখ থেকেই বোঝা যাবে কী রকম বিচার হবে।’’