West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: প্রার্থী টলিউডের একঝাঁক শিল্পী, তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণ কতটা সরল আর কতটা জটিল?

এ বারের নির্বাচন কি টলিউডের রাজনীতিতেও নতুন সমীকরণ আনবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২১ ০৮:১৮
Share:

তনুশ্রী,পায়েল,শ্রাবন্তী, রাজ, সায়ন্তিকা ও যশ

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে একটি পদযাত্রা এবং জনসভা করেছিলেন। সেখানে তাঁর পাশে দুই সাংসদ নুসরত জাহান এবং মিমি চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। ঠিক তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় একটি পদযাত্রা করেন, যেখানে ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশানী মুখোপাধ্যায়েরা। সে দিন মিমি-নুসরতের অনুপস্থিতি অনেকের নজরে এসেছিল। হতে পারে এটা নেহাতই কাকতালীয় ঘটনা। কিন্তু এটাও ঠিক, নির্বাচনী লড়াইয়ে শামিল হওয়া তারকাদের মধ্যকার সমীকরণ সহজ নয়। যেমন নুসরতের সঙ্গে সায়ন্তিকার সম্পর্ক ভাল নয়। অন্য দিকে কৌশানীর সঙ্গে তৃণমূলের বাকি সেলেবদের অন্তরঙ্গতা নেই। জটিলতা গেরুয়া শিবিরেও আছে। শ্রাবন্তী, পায়েল সরকার বা তনুশ্রী চক্রবর্তীরা এখন যতই সেলফি তুলুন, এঁদের ঘনিষ্ঠতার গল্প শোনা যায় না। এ বারের নির্বাচন কি টলিউডের রাজনীতিতেও নতুন সমীকরণ আনবে?

Advertisement

গার্ল গ্যাংয়ের অন্য চিত্র

Advertisement

নায়িকাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় না, এই আপ্তবাক্য ভুল প্রমাণ করেছিল নুসরত, মিমি, শ্রাবন্তী, সায়ন্তিকা, তনুশ্রীদের গার্ল গ্যাং। কিন্তু পরে নুসরত-সায়ন্তিকার বিবাদের আঁচ পড়েছিল বাকিদের মধ্যেও। খানিকটা একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। ব্যক্তিগত জীবনের জটিলতায় শ্রাবন্তীও গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। সেই ফাটল আজও মেরামত হয়নি। একমাত্র তনুশ্রীর সঙ্গে বাকিদের সহজ সম্পর্ক ছিল। সেই পুরনো বন্ধুরাই এখন রাজনীতির ময়দানে দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। নায়িকারা মুখে যতই বলুন রাজনীতির প্রভাব ব্যক্তিগত জীবনে পড়বে না, কিন্তু তা কি হয়? সায়ন্তিকার হয়ে মিমি বা নুসরত জনসভা করবেন, এমনটা তো স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু নুসরত-সায়ন্তিকাকে এক মঞ্চে দেখা যায়নি। মিমি-নুসরত-সায়ন্তিকারা এক দিকে দিদির হয়ে প্রচার করছেন। অন্য দিকে, তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রতি আক্রমণ হানছেন শ্রাবন্তী-তনুশ্রীরা।

বন্ধুত্বের সঙ্কট?

কেরিয়ারের স্ট্রাগলে রাজ চক্রবর্তী এবং রুদ্রনীল ঘোষ পাশাপাশি ছিলেন। তাঁদের বন্ধুত্বের জমাটি গল্প টলিউডে সুবিদিত। তৃণমূলের মঞ্চেও তাঁদের পাশাপাশি দেখা যেত আগে। রুদ্রনীলের শিবির বদলের গুঞ্জনের মাঝেও ঘরোয়া আড্ডায় পাওয়া গিয়েছে দু’জনকে। তবে গত দু’মাসে বদলে গিয়েছে চেনা অঙ্ক। টেলিভিশন চ্যানেলে পরস্পরের বিরুদ্ধে গলা ফাটাচ্ছেন রাজ আর রুদ্রনীল, যে আক্রমণ নেমে এসেছিল ব্যক্তিগত স্তরেও। ‘‘ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখার জন্য রাজকে অনেক কিছুই করতে হচ্ছে,’’ এমন মন্তব্য করেছেন রুদ্রনীল। রাজ পাল্টা বলেছেন, ‘‘রুদ্র এত বার বদলেছে যে, ওর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’’ সঙ্কটে রুদ্রনীলের সঙ্গে কাঞ্চন মল্লিকের বন্ধুত্বও। রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকা কাঞ্চন ‘শখের রাজনীতি’ করছেন, এমন কথা শোনা গিয়েছে রুদ্রনীলের মুখে। এ দিকে কাঞ্চন একদা ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কোনও কথাতেই আমল দিচ্ছেন না। সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না হলেও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান সকলেরই জানা। নাম না করে রুদ্রনীলের বিরোধিতা করেছেন পরমব্রত। নির্বাচনী পর্ব মিটে গেলে এঁরা সকলেই কি উদ্যত তরবারি গুটিয়ে নেবেন?

কোনটা দায়, কোনটা দায়িত্ব

কৌশানী, সায়ন্তিকা, পায়েল, যশ দাশগুপ্ত বা পার্নো মিত্র... এঁরা সকলেই এখন জনসংযোগে ব্যস্ত। কিন্তু টলিউডের অন্দরেই এঁদের জনসংযোগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যশের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির অন্য কোনও তারকার ঘনিষ্ঠতা আছে বলে শোনা যায়নি। তিনি থাকেন নিজের মতোই। কৌশানী-বনিও নিজস্ব বৃত্তে মশগুল। একই পরিস্থিতি সায়ন্তিকা বা পার্নোর। নায়িকাদের মধ্যে একমাত্র মিমির সঙ্গেই পার্নোর বন্ধুত্ব শোনা যায়। শ্রাবন্তীও ইন্ডাস্ট্রিতে মেলামেশা কমিয়ে দিয়েছেন। ইন্ডাস্ট্রির চলতি অভিযোগ, সায়ন্তিকা-কৌশানীকে ফোনে পাওয়া যায় না। টলিউডের অন্দরে নিজেদের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকা তারকারা জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব কী ভাবে পালন করবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

গোলমেলে হিসেব

সকলের সব অঙ্ক, সব হিসেব গোলমাল হয়ে গিয়েছে যশ-নুসরত এবং বনি-কৌশানীকে দেখে। তাঁরা স্বীকার না করলেও, ইন্ডাস্ট্রির গুঞ্জন নুসরত-যশ প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে তাঁরা একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, এমন খবরও রয়েছে। তাঁরা দু’জনেই বলছেন, রাজনৈতিক রং তাঁদের সম্পর্কে পড়বে না। একই কথা বলছেন তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী এবং বিজেপি সদস্য বনি। তাঁরা যতই বিষয়টি লঘু করে দেখুন না কেন, তাঁদের এই ‘সহাবস্থান’ ধন্দে ফেলে দিয়েছে জনসাধারণকে!

ভোটের মরসুম কেটে গেলে রং, শিবির নির্বিশেষে তারকারা কী ভাবে তাঁদের সম্পর্কগুলো সাজিয়ে নেন, সেই অঙ্কেও নজর থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement