ইউনুস সরকার ফাইল চিত্র
ছাত্র অবস্থা থেকে বাম রাজনীতিতে হাত পাকিয়ে ছিলেন তিনি। পাঁচ বছর প্রধান, দশ বছর মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য। আর টানা চারবারের জলঙ্গির বিধায়কের দায়িত্ব সামলেছেন এই বাম নেতা। সীমান্তের জলঙ্গি বিধানসভার বেতাজ বাদশা হিসেবে পরিচিত সিপিএম নেতা ইউনুস সরকারও শেষ পর্যন্ত দল ছাড়লেন প্রার্থী হতে না পেরে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। বৃহস্পতিবার বিকেলে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন দলের সমস্ত পদ থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। তবে এখনই অন্য দল বা নির্দলে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে তার দাবি, ‘‘আমি এখন একজন সাধারণ সিপিএম সমর্থক। দলের কর্মসূচিতে যোগ দেব। দলের পক্ষ থেকে বারণ করা হয় তাহলে দেব না।’’ জেলা জুড়ে এক ডাকে চেনে জলঙ্গির এই ডাকাবুকো বাম নেতাকে। ফলে তার দলছুটে স্বভাবতই হতবাক হয়েছে সিপিএম। তাদের অনেকের দাবি, এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না ইউনুস এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
রাজ্যে বামেদের পতন হওয়ার পরেও বামেদের গড় বলেই পরিচিত ছিল জলঙ্গির। এমনকি বিধানসভা থেকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং একাধিক পঞ্চায়েতে আধিপত্য ছিল তাদের। কিন্তু বছর দেড়েক আগে বাম বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দেয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের দৌরাত্ম্যের সামনে দাঁড়াতে পারেনি বামেরা, ফলে সারা রাজ্যের মতই একটু একটু করে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল জলঙ্গির সিপিএমের। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক দলছুটে হওয়ার পর থেকেই দলের হাল ধরেন ইউনুস সরকার। নানা সময়ে জঙ্গি আন্দোলন, মিছিল মিটিং করে গ্রেফতারও হয় সে। আর তারপর থেকেই আবার জলঙ্গিতে বামেদের মুখ হয়ে ওঠে ইউনুস সরকার। এমনকি এবার বামেদের পক্ষ থেকে তাকেই আবার বিধানসভায় লড়তে পাঠানো হবে বলে গুঞ্জন তৈরি হয় জলঙ্গি জুড়ে। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রার্থী করা হয় সাইফুল মোল্লা নামের এক সিপিএম নেতাকে, আর তাতেই বেজায় চটে যায় দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া সিপিএম
নেতা ইউনুস।
মূলত জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরীর দিকে আঙ্গুল তুলেছেন তিনি। যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চান নি। তিনি বলেন, "আপনার কাছে এই প্রথম ঘটনাটি শুনছি, আমার এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই। ফলে ইউনুস সরকারের সঙ্গে কথা না বলে কোনও মন্তব্য করব না।" অন্যদিকে ইউনুস সরকার দলের সমস্ত পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে নির্দল প্রার্থী নিয়ে।