West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ঘাম ঝরাচ্ছেন প্রার্থী, ‘লড়াই’ পরিবারেরও

প্রার্থীর সহধর্মিণীরাও মাঠে নেমেছেন।

Advertisement

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২১ ০৫:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

কাঠফাটা রোদে চামড়া ঝলসে যাওয়ার উপক্রম। প্রচারের ফাঁকে গ্রামে নলকূপ চোখে পড়তেই এগিয়ে গেলেন শ্যামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অমিতাভ চক্রবর্তী। নলকূপ পাম্প করে দিলেন কে? মেয়ে সৃজনী।

Advertisement

উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল প্রার্থী সমীর পাঁজার ছেলে, বছর সাতাশের সুমন ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিধারী। সমবায় ব্যাঙ্কের আধিকারিক। প্রচারে জলের বোতল, ওআরএস সঙ্গে নিয়ে বাবার সঙ্গে হাঁটছেন।

দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না বিশেষও। উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুর ছেলে বাবার হয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সামলাচ্ছেন।

Advertisement

ভোট যত এগিয়ে আসছে, প্রচার বাড়ছে। হাওড়ায় প্রার্থীদের ছেলেমেয়েরাও বসে নেই। সৃজনী, সুমন, বিশেষরাও খাটছেন
বাবাকে জেতাতে।

বছর কুড়ির সৃজনী বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। করোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। সৃজনী তাই বাবার সঙ্গে প্রচারের কাজে নেমে পড়েছেন। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় চিঠিপত্র মেল করা, সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা— সব মেয়েই করছে।’’ সজনীর কথায়, ‘‘বাবা বিরোধী দলের প্রার্থী। ফলে, তাঁকে চলতে হচ্ছে বিপরীত স্রোতে। তবে দলটার নাম যেহেতু কংগ্রেস, তাই আমার নিজের বিশেষ অনুভূতি হচ্ছে। একটা শতাব্দীপ্রাচীন দলের হয়ে কাজ করছি, ভেবেই গায়ে কাঁটা দেয়।’’

সমীরবাবুর ছেলে সুমন সমবায় ব্যাঙ্কের আধিকারিক। তিনি বাবার সঙ্গে থাকবেন বলে ছুটিই নিয়ে নিয়েছেন। সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় সমীরবাবুর প্রচারের কর্মসূচি। সুমনও এক মুহূর্ত বাবাকে কাছছাড়া করেন না। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকে বাবাকে রাজনীতি করতে দেখছি। বাবা কত বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি পার করেছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের বড় করেছেন। তাই এই লড়াইয়ে বাবার সঙ্গে শামিল সামিল হয়েছি।’’ ছেলের নতুন ভূমিকায় আপ্লুত সমীরবাবু বলেন, ‘‘দলের অসংখ্য কর্মীই আমার সম্পদ। তবু নিজের ছেলে যখন পাশে দাঁড়ায়, তা আলাদা করে ভরসা জোগায় বইকি।’’

বছর চল্লিশের বিশেষ বহুজাতিক সংস্থার আধিকারিক। তাঁকে পাশে পেয়ে বাবা বিদেশ বসু অনেকটাই ‘ভারমুক্ত’। উলুবেড়িয়া পূর্বের এই তৃণমূল প্রার্থী বলছেন, ‘‘ছেলে একটা দিক দেখছে বলে আমি জনসংযোগে আরও মনোযোগ দিতে পারছি।’’ মানুষের সঙ্গে মেশা বিদেশবাবুর কাছে নতুন নয়। কিন্তু ছেলের কাছে নতুন। একটা অভিজ্ঞতাও। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কর্পোরেট জগতের লোক। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের খুব একটা সুযোগ নেই। কিন্তু এখানে দেখছি মানুষের কত সমস্যা, যা উপর থেকে বোঝা যায় না। এই অভিজ্ঞতা সারা জীবনের সঞ্চয় হয়ে থাকবে।’’

দুই প্রার্থীর সহধর্মিণীরাও মাঠে নেমেছেন। একজন— বাগনানের তৃণণূল প্রার্থী অরুণাভ সেনের স্ত্রী মৌসুমি, অন্যজন— সমীরবাবুর স্ত্রী সুলেখা। দুই মহিলারই অবশ্য রাজনৈতিক পরিচয় আছে। মৌসুমি তৃণমূলের দখলে থাকা বাগনান-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। সুলেখা উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। তবে দু’জনেরই দাবি, মাঠে নামার পিছনে যতটা না রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার চেয়েও বেশি রয়েছে স্বামীদের পাশে
থাকার তাগিদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement