—প্রতীকী ছবি।
তাঁদের কারও ক্ষেত্রে বাধা বয়স, কারও বাধা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু তাঁরা যাতে ভোট-প্রক্রিয়া থেকে দূরে না-থাকেন, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। তাই এ বার মনোয়নয়নপত্র জমা পড়ার পরে পরেই ভোট নিতে আশি বা তার বেশি বয়সের ভোটার এবং প্রতিবন্ধী ভোটারদের দরজায় দরজায় হাজির হবেন ভোটকর্মীরা। যে-সব ভোটারের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ৪০ শতাংশের বেশি, এই সুবিধা শুধু তাঁরাই পাবেন বলে জানিয়েছে কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার-সংখ্যা কমবেশি সাড়ে সাত কোটি। কমিশনের হিসেব অনুযায়ী তাঁদের মধ্যে অশীতিপর ও প্রতিবন্ধী ভোটারের সংখ্যা দু’তিন শতাংশ। বিধানসভা কেন্দ্র-পিছু এই ধরনের ভোটার আছেন গড়ে পাঁচ-ছ’হাজার।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মনোনয়নপত্র পেশের পরে তাদের কর্মী-অফিসারেরা দু’দফায় এই দু’ধরনের ভোটারদের বাড়িতে যাবেন। অশীতিপর ও প্রতিবন্ধীরা বুথে গিয়ে, নাকি বাড়িতে বসেই ভোট দেবেন— প্রথম দফায় তাঁরা সেটা জানতে চাইবেন এবং তাঁদের কাছ থেকে একটি সম্মতিপত্র সংগ্রহ করবেন। প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত শংসাপত্রও খতিয়ে দেখা হবে। যাঁরা বাড়িতে বসে ভোট দিতে চাইবেন, তাঁদের জন্য আলাদা কাগজের ব্যালট তৈরি করা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় যে-দিন ভোট হবে, তার পাঁচ থেকে সাত দিন আগে সেই ব্যালট নিয়ে ফের ভোটারদের বাড়ি যাবেন কমিশনের কর্মী-অফিসারেরা।
এক কমিশন-কর্তা জানান, পুলিশ নিয়ে চার জন পোলিং অফিসার ওই সব ভোটারদের বাড়িতে যাবেন। এই ভোট সংগ্রহের বিষয়ে পৃথক নির্বাচনী নির্ঘণ্ট তৈরি করা হবে। নির্ঘণ্ট অনুযায়ী কমিশনের তরফে খবর দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এজেন্টদের। কমিশন চায়, নির্দিষ্ট দিনে অশীতিপর ও প্রতিবন্ধীদের বাড়িতে গিয়ে ভোট নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট সব প্রার্থীর এজেন্টরাও যেন উপস্থিত থাকেন। সব রকম গোপনীয়তা বজায় রেখেই ভোট নেওয়া হবে। ভোট দেওয়ার পরে সেই ব্যালট খামে ভরে সিল করে কমিশনের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেবেন ভোটারই। সিল করা সেই সব খাম নির্দিষ্ট জেলার ট্রেজ়ারিতে রাখা হবে। গণনার দিন প্রথমে গোনা হবে ওই সব ব্যালটই। নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার ব্যাখ্যা, শুধু করোনা আবহ বলে নয়, এমনিতেই অনেক ক্ষেত্রে অশীতিপর মানুষজন বয়সের কারণে এবং প্রতিবন্ধীরা শারীরিক সমস্যার জন্য বুথে গিয়ে ভোট দিতে আগ্রহ দেখান না। রাজনৈতিক দলের সদস্যেরা ওই সব ভোটারের কাউকে কাউকে বিশেষ ব্যবস্থা করে বুথে নিয়ে যান। সে-ক্ষেত্রে একটা রাজনৈতিক প্রভাব কমিশনের পর্যবেক্ষণ, সেক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়ে সাহায্যকারীর দলকেই ভোট দেন বেশির ভাগ মানুষ।। বাড়িতে বসে ভোট দিতে পারলে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। সর্বোপরি সব নাগরিক যাতে ভোট দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার উদ্যোগ চলছে। অশীতিপর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য এই উদ্যোগ তারই অঙ্গ বলে কমিশনের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।