প্রতীকী ছবি।
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঘাত লাগার ঘটনার পরে তারকা প্রচারক এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ভার দেওয়া হতে পারে আধাসেনাকে। বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে অনুমোদন করলে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে।
কোনও তারকা প্রচারক বা প্রার্থী ভোট সভার পরিকল্পনা করলে সেখানকার জেলা নির্বাচনী অফিসার তথা জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানাতে হয়। পুলিশ সুপার সূচি অনুযায়ী ভিআইপি-র নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেন। কমিশন সূত্রের খবর, এই পদ্ধতি পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে। তা কার্যকর হলে তারকা প্রচারক বা প্রার্থীর সূচি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা। বাহিনীর কর্তারাই তখন প্রার্থীর জন্য নিরাপত্তা কৌশল তৈরি করবে। মুখ্যমন্ত্রীর চোট লাগার পরে তৃণমূল-কমিশনের মধ্যে কার্যত নজিরবিহীন চাপান-উতোর শুরু হয়। ঘটনার দায় কার্যত কমিশনের উপরে চাপায় শাসক দল। তৃণমূলকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ খারিজ করে কমিশন।
কমিশন-কর্তাদের একাংশ জানান, ভোটের সময় সাধারণ ভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে এমন অভিযোগ উঠলে কমিশনের পক্ষে তা অস্বস্তির। তাই নন্দীগ্রামের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইছে না কমিশন। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্তা এবং বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক। এ বার তাঁদের কাছে এই পরিকল্পনা পেশ করা হবে।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার হাবড়ায় জানান, নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরাও। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আক্রমণের ঘটনা পরিকল্পিত। তাঁকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল।’’
বিজেপির কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘আমি নন্দীগ্রামে যাইনি। যা জানতে পেরেছি, তাতে নন্দীগ্রামের লোককে দোষারোপ করায় তাঁরা কষ্ট পেয়েছেন, দুঃখ পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা দুর্ঘটনা। কেউ হামলা করেনি। তা নিয়ে ওই এলাকার লোকের উপরে মিথ্যে দোষারোপ করা হয়েছে।’’ কৈলাসের কটাক্ষ, ‘‘মমতার উপরে হামলা হলে তা ‘অষ্টম আশ্চর্যের ব্যাপার’ হত। কেননা কারও হিম্মত নেই যে, তাঁর দিকে চোখ তুলে তাকায়। মমতার দিকে তাকানো তো দূরের কথা, তাঁর লোকজনের দিকেও কেউ চোখ তুলে তাকাতে সাহস করে না।’’
সিইও-র দফতর জানিয়েছে, নন্দীগ্রামের ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ এবং জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তাদের হাতে এসেছে। সিইও কার্যালয় নিজেদের বক্তব্য লিখে সেই রিপোর্ট পাঠিয়েছে কমিশনের কাছে।