নির্বাচন কমিশনারের দফতরে বিমান বসু, আব্দুল মান্নান, নওসাদ সিদ্দিকি, মনোজ ভট্টাচার্য প্রমুখ
শীতলখুচির ঘটনায় কোনও ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ ছাড়াই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বক্তব্যে কেন নির্বাচন কমিশন সিলমোহর দিল, কমিশনে গিয়েই সেই প্রশ্ন তুলল সংযুক্ত মোর্চার প্রতিনিধিদল। ওই ঘটনার পরে মানুষের কাছে কমিশনের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নষ্ট হয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ তাদের।
সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ও আপত্তি জানিয়ে সোমবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অধিকারিকের (সিইও) দফতরে দরবার করতে মোর্চার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, আইএসএফের চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকী প্রমুখ। কোনও বিষয়ে দাবি জানাতে কমিশনে বিমানবাবুর যাওয়া সাম্প্রতিক কালে এই প্রথম।
সিইও-র দফতর থেকে বেরিয়ে বিমানবাবু এ দিন বলেন, ‘‘শীতলখুচিতে ভোটের দিন আক্রান্ত হয়ে আত্মরক্ষার স্বার্থেই কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে তারা সাফাই দিয়েছে। কিন্তু সেই দাবির পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য কোনও তথ্য-প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। অথচ কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সেই সাফাইয়েই সিলমোহর বসিয়েছে। এর ফলে মানুষের কাছে কমিশনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়েছে।’’ পঞ্চম দফার ভোটের আগে ৭২ ঘণ্টা প্রচার বন্ধ রাখার কমিশনের নির্দেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী জোট। বিরোধী নেতা মান্নানের কথায়, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টাই প্রচার বন্ধ রাখার কথা। সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৭২ ঘণ্টা করে দেওয়া আইনসম্মত নয়। কীসের ভিত্তিতে কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিল, আমরা জানতে চেয়েছি। অন্যদের প্রচার বন্ধ হচ্ছে অথচ বাংলাদেশের ওরাকান্দি ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন মতুয়াদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন, এ রাজ্যে ভোটের দিনই তার সম্প্রচার চলছে!’’ ভোটের দিনে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সভার সম্প্রচার বন্ধ করার দাবিই তুলেছেন বিরোধী নেতারা। সিইও বিরোধী নেতাদের জানিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
রাজ্যে আরও শীতলখুচির মতো ঘটনা ঘটবে বলে শাসানি দেওয়ার পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রচার বন্ধ করার জন্যও কমিশনে দাবি জানিয়েছেন বিমানবাবুরা। শীতলখুচির ঘটনা নিয়ে একই প্রশ্ন তুলে এবং দিলীপবাবু, রাহুল সিংহ, সায়ন্তন বসু, অর্জুন সিংহদের মতো বিজেপি নেতাদের প্রচার থেকে বিরত করার দাবি জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনও। ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও গণহত্যা’র বিরুদ্ধে এ দিনই মৌলালিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের ‘হত্যা’র প্রতিবাদে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সুবিচারের দাবিতে আজ, মঙ্গলবার সারা দেশেই প্রতিবাদ দিবস পালনের ডাক দিয়েছে লিবারেশন।