মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ ও মায়াবতী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম নন। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করায় এর আগেও একাধিক নেতা-নেত্রীর ভোট-প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় রয়েছেন একজন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি যোগী আদিত্যনাথ। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র অন্যতম তারকা প্রচারক।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে লোকসভা ভোটের প্রচারে ‘ওরা-আমরা’র প্রসঙ্গ টেনে ‘আলি বনাম বজরংবলি’ সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন যোগী। প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জন্য নির্বাচন কমিশন ৭২ ঘণ্টার (৩ দিন) জন্য তাঁর প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। যদিও ওই ঘটনার কয়েক মাস পরেই দিল্লির বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে শাহিনবাগের সিএএ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভা ভোটের সময় উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর উপর নেমে এসেছিল কমিশনের নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। একেবারে মমতার সুরে উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘুদের কাছে ভোট ভাগ না করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সমাজবাদী পার্টি-বহুজন সমাজ পার্টির যৌথ প্রচার-মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের কাছে আবেদন জানাব, কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে নষ্ট করবেন না।’’ পরিনামে ৪৮ ঘণ্টার (২ দিন) জন্য তাঁর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময়ই আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কংগ্রেসের নভজোৎ সিংহ সিধু, সমাজবাদী পার্টির আজম খান এবং বিজেপি-র মেনকা গাঁধীর প্রচারের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল কমিশনের তরফে।
এর আগে ২০১৪-র লোকসভা ভোটের সময় অমিত শাহের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। মুজফফ্রনগরে গোষ্ঠীহিংসার পরে অমিত একটি ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’ হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রতিশোধের বার্তা দিয়েছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই এ বার অসম এবং তামিলনাড়ুতে বিধানসভা ভোট। অসমের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা তথা মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে চলতি মাসে প্ররোচনা মূলক মন্তব্যের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কমিশন। গত ৬ এপ্রিল সে রাজ্যে তৃতীয় তথা শেষ দফার নির্বাচনের আগে ৪৮ ঘণ্টার জন্য হিমন্তের নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। হিমন্ত একটি নির্বাচনী সভায় হুমকি দিয়েছিলেন, ভোট শেষ হলে এনআইকে-কে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী বড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টের নেতাদের জেলে ভরা হবে। এ বিষয়ে হিমন্তকে প্রথমে শোকজ করে কমিশন। তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়।
তামিলনাড়ুর ডিএমকে সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ রাজার বিরুদ্ধেও চলতি মাসেই ৪৮ ঘণ্টার জন্য ভোট প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা এডিএমকে নেতা কে পলানীস্বামীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের দায়েই তাঁকে এই শাস্তি দেওয়া হয়।