বসিরহাট দক্ষিণের বিদায়ী বিধায়ক দিপেন্দু বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে এ বারের মতো তাঁর ‘বিখ্যাত দৌড়’ দেখাতে পারবেন না। শুক্রবার দুপুরে জানতে পেরেছেন সে কথা। তার পর নিজের কাছে তাঁর প্রশ্ন, ‘ভাবছি কী করব’?
প্রশ্ন করেছেন বসিরহাট দক্ষিণের বিদায়ী বিধায়ক দিপেন্দু বিশ্বাস। একদা ভারতীয় ফুটবল দল তথা তিন প্রধানের স্ট্রাইকার (অধুনা মহমেডান স্পোর্টিংয়ের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর) দীপেন্দুর রাজনীতিতে যোগদান সদ্য নয়। সেই ২০১৪ সাল থেকেই তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ছেন। প্রথম বার বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্যের কাছে হারলেও বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রেই দেখা গিয়েছে স্ট্রাইকার দীপেন্দুর ‘বিখ্যাত দৌড়’। শমীককে হারিয়ে ওই কেন্দ্র থেকে বিধানসভায় গিয়েছেন।
তবে পো়ড়খাওয়া হওয়া সত্ত্বেও এ বারের বিধানসভার প্রার্থিপদ না পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ দীপেন্দু। শুক্রবার দুপুরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর পরই সে ক্ষোভ প্রকাশ্যে এনেছেন। নেটমাধ্যমে দীপেন্দু লিখেছেন, ‘দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে একবার বাদে প্রতিবার ভোটের লড়াইয়ে দলকে জিতিয়েছি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি সর্বক্ষণ। আমার ব্যবহারে কেউ দুঃখ পেলে ক্ষমা করবেন’। এর পর নিজের মনের কথাও জাহির করেছেন সংবাদমাধ্যমে। বলেছেন, ‘‘ফুটবল বা ক্রিকেটে পারফরম্যান্সই শেষ কথা। আমি এটাই জেনে এসেছি। আমি তো ফুটবলার। আমার কাছে ভাল খেলাটাই বড় কথা ছিল। এখন রাজনীতিতে এসেছি। সেখানেও পারফরম্যান্সই শেষ কথা বলে জানতাম। আমি সাধ্যমতো মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’’ সেই সঙ্গে দলের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আমাকে প্রার্থী করা হল না কেন সেটা আমি দলের কাছেই জানতে চাই।’’
দলের কাছে দীপেন্দু তাঁর প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। তবে জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনতার দরবারেই নিজের মনের অবস্থা জানিয়ে দিয়েছেন এই প্রাক্তন ফুটবলার। ফেসবুকে তাঁর পোস্টে দৃশ্যতই হতাশ এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বলে মনে হয়েছে দীপেন্দুকে। ওই পোস্টের পর তাঁর অনুরাগীদের একের পর মন্তব্য এসেছে ফেসবুকে। বেশির ভাগই আশ্বাস দিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, ‘বসিরহাটের মানুষের হৃদয়ে দীপেন্দু বিশ্বাস’। যদিও নির্মম সত্যি হল, নীলবাড়ির লড়াইতে দেখা যাবে না তাঁকে। দীপেন্দুর বদলে ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করবেন চক্ষূরোগ বিশেষজ্ঞ সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনাচক্রে, দীপেন্দুর ফেসবুকের কভার ছবিতে এখনও মমতাই রয়েছেন। সঙ্গে পোস্টার, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। কিন্তু তিনি কী চান! আপাতত তা নিয়েই ভাবিত দীপেন্দু।